ছাত্র-জনতাকে ধোঁকা না দিয়ে জুলাই বিপ্লবের চেতনা বাস্তবায়নে সব রাজনৈতিক দলকে ভূমিকা রাখতে হবে : অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান

# খালিশপুরের বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চতকরণ, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার ৫ দফা দাবি পূরণ করেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন, সংবিধানের দোহাই দিয়ে জুলাই চেতনা বাস্তবায়নে একটি দল বাধা দিচ্ছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী যেই দলটি প্রতিদিন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে সেই দল কোন সংবিধানের আলোকে নির্বাচনের দাবি করছে সেই প্রশ্ন রেখে দিলাম। তিনি আরও বলেন, যদি হাসিনার তৈরি সংবিধান মানা হয় তাহলে সেই সংবিধান অনুযায়ী ২০২৯ সালে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। ছাত্র-জনতাকে ধোঁকা না দিয়ে জুলাই বিপ্লবের চেতনা বাস্তবায়নে সব রাজনৈতিক দলকে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন পদ্ধতির দুর্বলতার সুযোগে এদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছিল। বিদ্যমান পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে আবার ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। তাই দেশের সর্বস্তরের জনতার দাবি, আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে। জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। পাশাপাশি সংসদের উভয় কক্ষে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি চালু করা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, ফ্যাসিস্ট সরকারের গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচারসহ পাঁচ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। রোববার (৫ অক্টোবর) দিনব্যাপী খুলনা-৩ আসনের খালিশপুর পিপলস ৫ তলা কলোনীসহ বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ ও গনসংযোগকালে তিনি এ সব কথা বলেন।
এ সময় বাংলাদেশ ইসলামীর খুলনা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, খালিশপুর থানা আমীর আব্দুল্লাহ আল মামুন, গাজী আবু সাঈদ, শ্রমিক নেতা এস এম মাহফুজুর রহমান, মো. জাহিদুল ইসলাম, জামায়াত নেতা মো. আল কাওসার আমিন, মো. কামাল হোসেন, এডভোকেট আবু সাঈদ, মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, মোহাম্মদ আলী আজম, রিপন হোসেন, নুর ইসলাম, মো. মহসিন, মোহাম্মদ ডালিম, মো. আলমগীর হোসেন, আলমগীর হায়দার রিয়াজ, মোহাম্মদ জাকির হোসেন, মো. আবুল কালাম মো. হুমায়ুন পাটোয়ারী, শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ রিপন হোসেন, আব্দুস সোবহান, মাস্টার আবুল কালাম, মোহাম্মদ আলী, আমিরুল ইসলাম, আব্দুল জব্বার, মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, জালাল আহমেদ, আব্দুল হালিম, দ্বীন মোহাম্মদ, আফজাল হোসেন, রুহুল আমিন, ছাত্রনেতা ইসমাইল হোসেন, ইমন হোসেন, আব্দুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মহানগরী আমীর বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছিল। তারা পুলিশ বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় পেটুয়া বাহিনীতে পরিণত করেছে। নির্বাচন কমিশনকে মেরুদন্ডহীন করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে দুর্নীতির আজ্ঞাবহ কমিশনে রূপ দিয়েছে। বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করেছে। রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে স্তরে দলীয় এ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের সংবিধানকে দলীয় সংবিধানে রূপ দিয়েছে। এজন্য তারা সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে নিজেদের মতো করে সংবিধান রচনা করেছে। সেই সংবিধানের দোহাই দিয়ে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে রূপ দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অর্জিত জুলাই বিপ্লবে জাতি এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। এজন্য জাতি সংবিধান সংশোধন করে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অন্তবর্তী সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী অন্তবর্তী সরকারকে সংস্কার কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু একটি দল রাষ্ট্র সংস্কারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, ফলে অন্তবর্তী সরকার কর্তৃক গঠিত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। সরকার এজন্য ঐকমত্য কমিশন গঠন করেছে। ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশ বাস্তবায়নে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেও ওই দলটি আপত্তি জানিয়ে আসছে। কোনো দলের আপত্তি কিংবা চাপ থাকলে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে না পারলে গণভোটে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে সরকারে প্রতি আহ্বান রইলো। আমাদের পাঁচ দফা দাবি না মানলে জনগণ রাজপথে আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছে।’