স্থানীয় সংবাদ

খুলনায় নারী আনসার সদস্যকে কুপ্রস্তাব ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে

অপবাদ দিয়ে দূর্গা পূজার যাচাই- বাচাই থেকে বাদ
তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন

স্টাফ রিপোর্টার : খুলনায় মোঃ মিলন মিয়া নামে এক আনসার প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক নারী আনসার সদস্যকে কুপ্রস্তাব ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নেশাখোর অপবাদ দিয়ে দূর্গা পুজার দায়িত্ব থেকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি দূর্গা পুজায় আনসার ডিউটি প্রদান বাবদ অর্থ গ্রহণেরও অভিযোগ আছে। কু-প্রস্তাব ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় দিঘলিয়া উপজেলার উপজেলা আনসার কমান্ডার বরাবর মোসাঃ রিতা বেগম নামে এক নারী লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। যার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, এ বছর দুর্গা পূজায় মিলন নিজেই ৭টি পূজা মন্ডপের দলনেতা হয়ে বিভিন্ন আনসার সদস্যের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। উপজেলার অতি দরিদ্র– অসহায় নারীদের সাথে সরলতার সুযোগ নিয়েছেন । বিভিন্ন সময়ে আনসার নারী সদস্যদের বিভিন্ন অজুহাতে ডেকে উপজেলা অফিসে কু-প্রস্তাব দেওয়ারও অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তৈবগাতী গ্রামের এক নারী আনসার সদস্যকে দীর্ঘ চার বছর বিভিন্ন সময় ফোনে বা দেখা হলে কুপ্রস্তাব ও অশ্লীন কথা বলে উপজেলা আনসার প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ মিলন মিয়া । এমনকি তার সাথে একান্ত একটু সময় দিতে বলে। কুপ্রস্তাবে ও একান্ত সময় দিতে রাজি না হওয়ায় সদ্য সমাপ্ত দূর্গা পূজায়আনসার ডিউটিতে ১৬ সেপ্টেম্বর যাচাই- বাচাইতে কাগজ পত্র সঠিক থাকার পরও নেশাখোর অপবাদ দিয়ে তাকে বাদ দেয়া হয়। যা যাচাই বাছাইয়ের দিন আসা অনেক আনসার সদস্যরা সত্যতা স্বীকার করেন। যদিও পরে অন্য একটি গ্রুপে তাকে দূর্গা পূজা ডিউটিতে নেওয়া হয়।
লিখিত অভিযোগে আরও এক নারী আনসার সদস্য উল্লেখ করেন, তিনি অতি দরিদ্র অবস্থায় জীবন যাপন করিতেছি। জানতে পারি যে দূর্গা পূজার ডিউটিতে লোক নিয়োগ হচ্ছে তাই গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুর্গাপূজায় ডিউটি পাওয়ার উদ্দেশ্যে উপজেলা আনসার অফিসে যাই। সেখানে উপজেলা আনসার প্রশিক্ষক মিলন মিয়ার সাথে কথা হয়। মিলন মিয়া দুর্গাপূজায় ডিউটি দিবে বলে আশ্বস্ত করেন। এক কপি ছবি ও এক কপি ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি মোবাইল নাম্বার দিয়ে যেতে বলেন।গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টা ১৯ মিনিটে মিলন স্যার আমাকে ফোন করে বলেন, পূজার ডিউটিতে বিনা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোক নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবুও তুমি যদি ডিউটির পূর্বে একান্তে আমার আমার সঙ্গে নির্জনে সারাদিন কাটাতে পারো তাহলে আমি ডিউটির ব্যবস্থা করে দিব। কিন্তু এই কথা অন্য কাউকে জানাতে পারবা না।
গাজীরহাট ইউনিয়ন আনসার কমান্ড খায়রুল বলেন, অভিযোগকারী আমার এলাকার মেয়ে। সে কোন নেশার সাথে জড়িত না। যাচাই বাছাইয়ের দিন উপজেলা আনসার প্রশিক্ষক মোঃ মিলন মিয়া তাকে সবার সামনে নেশাখোর বলে অপবাদ দিয়ে আনসার ডিউটি থেকে বাদ দেয় । পরে তাকে আমার গ্রুপে ডিউটিতে নেই।
ভুক্তভোগী বলেন, আনসার সদস্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর থেকে আমাকে মিলন স্যার যখন দেখা হয় ও মোবাইলে আমাকে বিভিন্ন অশ্লীল কথা বলেন । এমনকি আমাকে অনৈতিক কুপ্রস্তাব দেয়। তার কথায় রাজি না হওয়ায় দূর্গা পূজা ডিউটি থেকে আমাকে নেশাখোর বলে বাদ দেয়। আমারা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাই।
দিঘলিয়া উপজেলা আনসার প্রশিক্ষক মো: মিলন মিয়া এ প্রতিবেদকের কাছে সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন।
দিঘলিয়া উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা শামসুনাহার খানম লিখিত অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ১৬ সেপ্টম্বর দূর্গা পূজার আনসার ডিউটির যাচাই- বাচাইয়ের দিন একটা মেয়েকে মিলন নেশাখোর বলছিল আমি শুনছি। এ সকল ঘটনা আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অভিযোগকারীকে ডেকে শুনে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে খুলনা জেলা আনসার কমান্ডান্ট মোঃ মিনহাজ আরেফিন দিঘলিয়া উপজেলা আনসার প্রশিক্ষক মোঃ মিলন মিয়ার বিরুদ্ধে এক নারীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন,সদর আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা তারিকুল ইসলামকে প্রধান কওর তিন সদস্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। আজ (সোমবার) তদন্ত কমিটি দিঘলিয়ায় ঘটনাস্থলে যাবে। তদন্ত কমিটি রির্পোট দেওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button