স্থানীয় সংবাদ

কেসিসির ডাস্টবিন বহনকারী একই ট্রাকের ধাকায় তিন ঘন্টার ব্যবধানে দু’জন পথচারি আহতঃ দু’ চালককে অব্যাহতি

স্টাফ রিপোর্টারঃ খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ময়লার ডাস্টবিন বহনকারী একই ট্রাকের ধাকায় তিন ঘন্টার ব্যবধানে নগরীতে দু’জন পথচারি আহত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পথচারি মটর সাইকেল ও বাই সাইকেল। এ ঘটনায় দু’ চালককে কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় নগরীর নতুন রাস্তার মোড় ও বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মিনা বাজার মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে খালিশপুর বিআইডিসি সড়ক দিয়ে ময়লা ভর্তি ডাস্টবিন নিয়ে কেসিসির একটি ট্রাক (কেসিসি-২/৪) নতুন রাস্তা মোড় দ্রুতগতিতে অতিক্রম করার সময় মিস্টির দোকানের সামনে দাঁড়ানো বাইসাইকেলে আঘাত করে। এতে সাইকেলটি দুমড়ে মুচড়ে যায় আর সাইকেল চালক গুরুতর আহত হয়। তাকে তাৎক্ষণিক খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ট্রাকটি বেপরোয়াগতিতে চালিয়ে সোনাডাঙ্গা বাইপাস সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় নির্বাচন অফিসের সামনে গেলে সামনের চাকা পানচার হয়ে গাড়িটি থেমে যায়। পরে চালক শিমুল গাড়ি রেখে পালিয়ে যায়। এই শিমুল একজন বহিরাগত শ্রমিক। তারপরও কর্তৃপক্ষ কোন আইনে লাখ লাখ টাকার গাড়ি তার হাতে ছেড়ে দিল এ প্রশ্ন জনগণের। প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজি চালক আল আমিন বলেন, ট্রাকটি এতই বেপরোয়াগতি ছিল নতুন রাস্তামোড় যেন চিলের মত দ্রুত গতিতে পার হয়ে যায়। তবে মোড়ে কোন গাড়ি না থাকায় বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে সবাই রক্ষা পেয়েছে। চা বিক্রেতা মতি ও জসিম জানান, “আমরা মনে করেছি ট্রাকটি খালিশপুরে কোন দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য এত দ্রুতগতিতে চলেছে। যা দেখে তারা আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েন।” খবর পেয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়িটি আটক করে। পরে কেসিসির কনজারভেন্সী অফিসার আনিসুর রহমান মুচলেকা দিয়ে গাড়িটি নিয়ে আসেন। আনার সময় গাড়ির চালক ছিলেন আরেক বহিরাগত শ্রমিক হাফিজুল। তিনি সারা রাস্তা ভালভাবে গাড়ি চালালেও মিনাবাজার মোড়ে এসে মটর সাইকেলকে মেরে দেয়। এতে মটর সাইকেল চালক আহত হয় এবং মটর সাইকেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি ও ক্ষতিগ্রস্ত মটর সাইকেল উদ্ধার করে কেসিসি গ্যারেজে নিয়ে যায়। তবে চালক শিমুল বলেন, গাড়ি ব্রেক ফেল করে।তাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। কেসিসির সচিব শরীফ আসিফ রহমান বলেন, স্থায়ী চালকের সংকট থাকায় অস্থায়ী চালক দিয়ে সেই চাহিদাপূরণ করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান। নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) আনিসুর রহমান বলেন, চালক সংকট থাকায় অস্থায়ী চালক দিয়ে গাড়ি চালানো হচ্ছে। এতে আইনের কোন সমস্যা হচ্ছে না। তবে ওই চালকের যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকে তাহলে গাড়ি চালানো আইনগত অপরাধ। এসব বিষয়গুলো তিনি খোঁজখবর নিয়ে জানাবেন বলে জানান। সহকারি প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সেলিমুল আজাদ বলেন, সচিব সাহেবের নির্দেশনায় ওই দু’ চালককে গাড়ি চালানো থেকে বিরত রাখা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বিকেলেই গাড়ির চাবি নিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে বলে তিনি জানান। তবে একটি সূত্র জানায়, যতই সংকট থাকুক আইনগতভাবে বহিরাগত শ্রমিক দিয়ে গাড়ি চালানো যায় না। তারপরও কর্তৃপক্ষ কেন করছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। এছাড়া একজন বহিরাগত শ্রমিককে গাড়ির হেলপার হিসেবে দায়িত্ব পেতে তাকে সর্বনি¤œ লাখ টাকা ঘুষ গুনতে হয়। গ্যারেজের একটি চক্র এ দুর্নীতির সাথে জড়িত। বহিরাগত শ্রমিকরা কিভাবে গাড়ি চালায় ও হেলপারের দায়িত্ব পায়-এ বিষয়গুলো তদন্ত করলে দুর্নীতিবাজদের নানা অনিয়মের খবর বেড়িয়ে আসবে বলে ওই সূত্রটি মনে করে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button