বেসরকারিভাবে রেডিয়েন্ট জুট মিল নামে শিগগিরই চালু হচ্ছে খালিশপুর জুট মিল

# ৩শ’ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে #
খলিলুর রহমান সুমনঃ বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রিত ও বন্ধকৃত খালিশপুর জুট মিল নতুন ভাবে চালু হচ্ছে। বন্ধের পাঁচ বছর পর বেসরকারিভাবে লিজ প্রথায় চালু হবে। ইতোমধ্যে মিলের নামও ঠিক করেছে লিজ গ্রহীতা। তিনি মিলের নাম দিয়েছে রেডিয়েন্ট জুট মিল লিমিটেড।
খালিশপুর জুট মিলের প্রকল্প প্রধান খলিলুর রহমান বলেন, ২০২০ সালের ৩০ জুন মিলটি সরকার বন্ধ ঘোষণা করে। তারপর থেকে আর চালু হয়নি। সরকার শ্রমিকদের এককালিন পাওনা পরিশোধ করেছে। তখন মিলে শ্রমিক ছিল ৩ সহ¯্রাধীক। বন্ধের পর সরকার বেসরকারিভাবে মিলটি চালু করার জন্য একাধিকবার উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় রেডিয়েন্ট গ্রুপ মিলটি লীজ নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। সে অনুযায়ী তারা ২০২৪ সালের ৪ জানুয়ারী সরকারের সাথে ৩০ বছর চুক্তিকে লীজ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৯ মার্চ’২৪ লীজ গ্রহীতার সাথে বিজেএমসির ইনভেনটারি হয়েছে। ওই কার্যক্রম শেষে গত ৩০ এপ্রিল’২৫ বিজেএমসি মিলটি লীজ গ্রহীতার কাছে হস্তান্তর করে। এখন লীজ গ্রহীতা মিলটি মেইনটেন্স কাজ করছে। তারা একটি মিল (১নং মিল) সংস্কার করছে। ওই মিলটি চালু করবে। তাতে আনুমানিক ৫শ’ লোকের কর্মসংস্থান হবে। তবে তারা পাট পণ্য উৎপাদন করবে। শ্রমিকদল নেতা ও প্লাটিনাম জুট মিলের সাবেক নেতা আবুল কালাম জিয়া বলেন, “আমরা আন্দোলন করছি সরকারিভাবে মিলগুলো পূণরায় চালু করার ব্যাপারে। কিন্তু সরকার তা শুনছে না। যেহেতু আমাদের দল ক্ষমতায় নেই। ক্ষমতায় আসলে মিলগুলো যাতে সরকারিভাবে চালু হয় সে ব্যাপারে চেষ্টা করা হবে।” রেডিয়েন্ট জুট মিলের টেকনিকেল কনসালটেশন মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আগামী ৩০ বছরের জন্য মিলের ৪৭ একর জমি লীজ নেয়া হয়েছে। বাকী ৫একর জমির উপর গড়ে ওঠা পুলিশ ক্যাম্পসহ অন্যান্য স্থাপনায় তারা হাত দিবেন না। তবে ২ ও ৩ নং মিল সরাতে বলা হয়েছে। মিল কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে টেন্ডার আহবান করেছে। ১নং মিলে সিভিল কাজ চলছে। প্রতিদিন দেড়শ’ লোক কাজ করছে। শিগগিরই ১নং মিলের সংস্কারের কাজ শেষ হলে মিল পরিক্ষামূলক উৎপাদনে যাবে। তবে তাতে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। মিল পুরো উৎপাদনে যেতে ২০২৬ সাল নাগাদ সময় লাগতে পারে। ওই সময় ১ হাজার থেকে ১২শ’ শ্রমিক কাজ করতে পারবে। তবে আপাতত ২/৩ শ’ শ্রমিক দিয়ে মিলটি পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যাওয়া হবে। মিলে হেশিয়ান. স্যাকিং ও ইয়ান (সুতা) উৎপাদন করা হবে। তবে পর্যায়ক্রমে পাটপণ্য ছাড়াও অন্য কিছু উৎপাদন করা হবে বলে তিনি জানান। এজন্য মিলের অবসরপ্রাপ্ত দক্ষ শ্রমিক খোঁজা হচ্ছে। মিল চালু হলে তাদের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ দেয়া হবে বলে তিনি জানান। শনিবার মিলে গিয়ে দেখা যায়, সর্বক্ষেত্রে নতুনের ছোয়া লেগেছে। বিজেএমসির নিরাপত্তা প্রহরীসহ রেডিয়েন্ট মিলের নতুন নিরাপত্তা প্রহরী দায়িত্ব পালন করছে। ১নং মিলে চলছে পুরো দমে সংস্কারের কাজ। রং তুলির ছোয়ায় ভবনগুলো যেন প্রাণ ছুয়ে পেয়েছে।
পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের আহবায়ক এড. কুদরত ই খুদা বলেন, সরকারী সম্পত্তি এভাবে লীজ দিয়ে লুটপাট করে খাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার। শ্রমিক ও নাগরিক সমাজের ‘সরকারীভাবে চালু করার’ দাবীর প্রতি সম্পান দেখিয়ে বন্ধ মিলগুলো সরকারী ভাবে চালু দাবির পাশাপাশি এ লীজ প্রথা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন এই নেতা।