খুলনা মহানগরী ও জেলা আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের স্মারকলিপি পেশ

স্টাফ রিপোর্টার ঃ বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে চলমান শিক্ষক আন্দোলনের সমর্থনে ও ৭ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে মিছিল সহকারে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জড়ো হয়। এখান থেকে নেতৃবৃন্দ খুলনা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে গিয়ে জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমানের হাতে স্মারক লিপি তুলে দেন। শিক্ষকদের এ কর্মসূচিতে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তৃতা করেন মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান ও কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ইকবাল হোসেন।
নেতৃবন্দ বলেন, দীর্ঘ সাড়ে পনের বছরের স্বৈরশাসন, বৈষম্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশ দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছে-তার চেতনায় শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতা, আদর্শ ও দেশপ্রেমের ভিত্তিতে নতুন সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।
আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের খুলনা মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন জেলা সভাপতি অধ্যাপক মো. আব্দুর রব, কারিগরি বিভাগের মহানগরী সভাপতি অধ্যক্ষ মো. খায়রুল ইসলাম, মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা এ এফ এম নাজমুস সউদ, পিএমজি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুন আর রশীদ, স্কুল শিক্ষক পরিষদের সেক্রেটারি মো. মাহিনুর রহমান, খুলনা দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা মো. মনিরুজ্জামান, রূপসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান, সবুরুননেছা মহিলা কলেজের অধ্যাপক মো. নূরুজ্জামান তুহিন, মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ খুলনা জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মো. আজিজুর রহমান, মহানগরী সেক্রেটারি মো. রিয়াজুল ইসলাম, ফেডারেশনের খুলনা কলেজ সভাপতি অধ্যাপক মো. ওয়ালিউল্লাহ, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক মারুফুর রহমান, অধ্যক্ষ মাওলানা শহীদুল ইসলাম, অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক শাহীনুর রহমান, অধ্যাপক এবিএম তৈয়্যেবুর রহমান প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, স্বাধীনতার পর থেকে বারবার নীতিনির্ধারণে রাজনৈতিক প্রভাব, ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও পাশ্চাত্য সভ্যতার অন্ধ অনুকরণ আমাদের নিজস্ব শিক্ষা কাঠামো বিকাশে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১০ সালের শিক্ষানীতি ও ২০২২ সাল থেকে বাস্তবায়িত পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষা উপেক্ষিত হয়েছে, যেখানে বিদয়াত ও শিরকিয়াতের মতো বিতর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন মনে করে, একটি টেকসই, যুগোপযোগী ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া কোনো জাতি টিকে থাকতে পারে না। তাই ফেডারেশন বিপ্লব-পরবর্তী জাতীয় বাস্তবতার আলোকে শিক্ষাক্ষেত্রে নীতিগত সংস্কার ও শিক্ষক-কর্মচারীদের অধিকার নিশ্চিতে বাড়ি ভাড়া ৪৫ শতাংশে উন্নীত, চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা নির্ধারণ, শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান, প্রস্তাবিত ১০৮৯টি ইবতেদায়ি মাদরাসা এমপিওভুক্ত করা, নন-এমপিও শিক্ষকদের চাকুরি স্থায়ীকরণ ও প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বকেয়া ভাতা দ্রুত পরিশোধ এবং বিগত সরকারের সময় যেসব এমপিওভুক্ত শিক্ষক তাঁদের পাওনা পাননি-তা নির্বাহী আদেশে প্রদান করতে হবে। শিক্ষক নেতারা বলেন, এ সব প্রস্তাব গৃহীত হলে শিক্ষাক্ষেত্রের মৌলিক ত্রুটি দূর হবে এবং সৎ, দক্ষ, আদর্শ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে তোলার পথ প্রশস্ত হবে