খুলনায় নাশকতা রুখতে দলমত সকলে রয়েছে সতর্কাবস্থায়

# খালিশপুর হচ্ছে মিনি গোপালগঞ্জ #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ সারাদেশে আ’লীগ ও তাদের লোকজন নাশকতার পরিকল্পনা নিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম ইপিজেড ও বিমান বন্দরে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা গণমাধ্যমে সাক্ষাতকারে এমনই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যা গুরুত্বসহকারে নিয়েছে আইন শৃংখলা বাহিনী। তারা সারা দেশে তাদের সর্তকতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তদারকি বাড়িয়েছে। সামনে সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটের আশায় অনেক বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীরা চিহ্নিত আ’লীগ নেতা কর্মীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়া শুরু করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত কয়েক দিন ধরে খালিশপুর, দৌলতপুর, আড়ংঘাটা, খানজাহান আলী থানা এলাকায় পালিয়ে থাকা আ’লীগ নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে আসছে। ঘোরাফেরা করছে। এসব ফ্যাসিস্টদের সাথে কোন কোন সময় বিএনপি ও জামায়াত নেতা-কর্মীদের সাথে ঘুরতে দেখা যায়। পালিয়ে যাওয়া আ’লীগ নেতাদের ঠিকাদারী কাজ কোনকোন বিএনপি নেতা মিলেমিশে করছে। এ কাজে মধ্যস্থতা করছে কোন কোন অফিসের প্রধান প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা। খালিশপুর থানার বিএনপির সাঃ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বিশ^াস বলেন, ফ্যাসিস্টদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়। যারা দিচ্ছে তারা প্রাশচিত্ত ভোগ করবে। কারণ এরা নিরাপদে থেকে সুযোগ বুঝে দেশে নাশকতা করছে। এদের ব্যাপারে সকলকে সর্তক থাকা উচিত বলে তিনি মনে করেন। এদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে খুলনার খালিশপুরকে মিনিগোপালগঞ্জ বলা হতো। কারণ খুলনার মধ্যে খালিশপুরেই গোপালগঞ্জের লোকজন সবচেয়ে বেশী। ওই সময় থানা থেকে শুর করে আ’লীগসহ সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে কোন কমিটি গঠন করতে হলে গোপালগঞ্জের লোকদের প্রধান দু’টি পদের একটি পদ দিতে হতো। তা না হলে ওই কমিটি কেউ অনুমোদন করতে পারতো না। ৫ আগস্টের আগে ছাত্র-জনতা দমন পীড়ন সবচেয়ে বেশী হয় এই খালিশপুরে। সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ মিছিল বের হয় খালিশপুরে। ভাংচুরও বেশী হয় এখানে। অর্থ্যাৎ ছাত্র-জনতা দমনে খালিশপুরের আ’লীগের ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মত। ৫ আগস্টের পর আ’লীগের নেতা-কর্মীরা পালিয়ে গেলেও তাদের পরিবার ও সন্তানরা এখানে রয়েছেন। ওইসব নেতা-কর্মীরা মাঝে মধ্যে এসে ২/১ দিন থেকে আবার চলে যাচ্ছে। এ সময় তারা স্থানীয় বিএনপি অথবা জামায়াত নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলছে। তবে সম্প্রতি অনেক নেতা-কর্মীকে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে নিরাপদে ব্যবসা পরিচালনা করছে। কেউ আবার অন্য জায়গা থেকে এসে হোটেল রেস্তরায় বা মিলে কাজ করছে। আবার কেউ ভদ্র ছেলের মত দোকান দিয়ে বসেছে। তাদের সুন্দর আচরণে কেউই ভাবতে পারছে না-এরা সেই ঝুলুমবাজ আ’লীগের নেতা-কর্মী। তারা নিরাপদে খুলনায় বসে দেশে নাশকতার ছক আঁকছে। বিষয়টি দেখার জন্য এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি আরো বাড়ানোর দাবি জানান খুলনাবাসী। এদিকে পতিত সরকারের কুখ্যাত শেখ বাড়ির কর্ণধররা পালিয়ে গেলেও তাদের অধিকাংশ সহযোগিরা রয়েছেন বহাল তবিয়তে। কেউ কেউ ভোল পাল্টিয়ে বিএনপি সাজতে ব্যস্ত রয়েছে। বিশেষ করে আ’লীগ আমলের ১২জন হাইব্রিড সাবেক কাউন্সিলররা কিছু দিন পালিয়ে থাকলেও এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। খানজাহান আলী থানার আ’লীগের নেতা ও ইউপি সদস্য এনামুল হক কবির গাজী এখন জামায়াত নেতা। তিনি বিগত দিনে আ’লীগের সকল কর্মকান্ড সামনের সারিতে থেকে বাস্তবায়ন করলেও এখন তিনি জামায়াত নেতা।খুলনা বিভিন্ন অফিস-আদালতে চাকুরি বহাল রয়েছেন আ’লীগের লোকজন। তারা চাকুরির পাশাপাশি নানা তথ্য পাচার করছে। এতে করে অফিস আদালতের অনেক কর্মকান্ডের তথ্য গোপন থাকছে না। তারা তথ্য পাচার করে অফিস আদালতকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। অফিস আদালতে কর্মরত এসব নেতা-কর্মীদের ব্যাপারে তদন্ত করে পদক্ষেপ নেয়া জরুরী বলে অনেকে মনে করছেন।জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, বিএনপি জন আখাংকাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। তারা কখনই সৈরাচারকে প্রশ্রয় দেয় না, ভবিষ্যতে দিবে না। আ’লীগ ও তার নেতা-কর্মীরা আতœগোপনে থেকে দেশে নাশকতা করছে। এদের ব্যাপারে কোন খবর থাকলে নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেয়া আছে তাদের ব্যাপারে আইন শৃংখলা বাহিনীকে অবগত করা। যাতে তারা নিরাপদে থেকে দেশে কোন ধরনের নাশকতা করতে না পারে। এসব ব্যাপারে দল নেতা-কর্মীদের সর্বোচ্চ সর্তক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে বলে এই নেতা জানান। মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা বলেন, সারা দেশে নাশকতা নিয়ে আমরাও আতংকিত। কখন কি হয় জানি না। আইন শৃংখলা উন্নতির জন্য পুলিশকে বারবার বলেও কোন কাজ হচ্ছে না। আর তারা নাশকতাকে কিভাবে মোকাবেলা করবে তা নিয়ে আমাদের মাঝে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। আমরা চাই এই নাশকতাকারীদের যেন কেউ আশ্রয় প্রশ্রয় না দেয়। কারণ এই নাশকতাকারীরা নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়। তাদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করা হচ্ছে বলে এই নেতা জানান। জামায়াত নেতা ও খুলনা ৩নং আসনের জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান জানান, কবির গাজী আগে আ’লীগ করতো কি না জানি না। তবে সে ছাত্র জীবনে শিবির করতো। তাই তাকে দলে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।