স্থানীয় সংবাদ

নগরীতে সরকারি রাস্তা দখল করে বাড়ি ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ

কেসিসি ও কেডিএ’র নির্দেশনা উপেক্ষিত
চাপের মুখে প্রাচীর ভাঙা হলেও রয়েছে পিলার

স্টাফ রিপোর্টার : খুলনা মহানগরীর মিস্ত্রীপাড়া খালপাড় সড়কে (শহীদ জিয়া সড়কের প্রবেশ মুখে) সরকারি রাস্তা দখল করে বাড়ি ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। ওই এলাকার মো. সিদ্দিকুর রহমান বাড়ির সামনের ৩ ফুট রাস্তা দখল করে এই বাড়ি ও প্রাচীর নির্মাণ করেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগসহ এলাকাবাসীর চাপের মুখে বাড়ির সামনের প্রাচীর ভাঙা হলেও ভাঙেনি প্রাচীরের পিলার। এদিকে, নিয়মবর্হিভুত কাজ করায় বাড়ির মালিক সিদ্দিকুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কেডিএ কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা জানান, শহীদ জিয়া সড়কের প্রবেশ মুখে মিস্ত্রীপাড়া খালপাড় সড়কের মোঃ সুন্দর আলীর ছেলে মোঃ সিদ্দিকুর রহমান ৮ ফুট সরকারি রাস্তার ৩ ফুট দখল করে বাড়ি ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। এতে সরকারি রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ায় আপত্তি তোলে এলাকাবাসী। কিন্তু তিনি কারো কথার তোয়াক্কা না করে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২২ অক্টোবর সিটি কর্পোরেশনের স্টেট অফিসার গাজী সালাউদ্দীন ও সার্ভেয়ার খায়রুল সরেজমিন পরিদর্শন করে ৭ দিনের মধ্যে প্রাচীর ভেঙে সরকারি রাস্তা অবমুক্ত করতে বললেও বাড়ির মালিক সিদ্দিকুর রহমান তার তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন স্থানে দেন-দরবারসহ তদবির শুরু করেন।
এদিকে, জনদুর্ভোগ রোধে গত ২৫ অক্টোবর সকাল ১০টায় ২৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সরেজমিন পরিদর্শন শেষে প্রাচীর ও স্থাপনা ভেঙে সরকারি রাস্তা অবমুক্ত করার জন্য সিদ্দিকুর রহমানকে অনুরোধ করেন। সে মোতাবেক ২৫ অক্টোবর রাত ১০টায় ওয়াল ভেঙে ফেললেও পিলারগুলো তিনি অক্ষত রেখেছেন। যা নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
কেসিসির রেকর্ড অনুযায়ী রাস্তার মুখ ১১ ফুট থাকলেও বাস্তবে রয়েছে ০৮ ফুট। কেডিএর নিয়মানুযায়ী ২০ ফুট রাস্তা না থাকলে কেউ প্লানের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। অথচ তার বাড়ির সামনে ৮ ফুট রাস্তা থাকলেও সিদ্দিকুর রহমান প্লান পাশ করার নিমিত্তে কেডিএ’কে ২০ ফুট রাস্তা দেখিয়ে প্লান পাশ করান। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী কেডিএ’র চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে সিদ্দিকুর রহমানকে ২৬ অক্টোবর কেডিএ’র অরাইজড অফিসার স্বাক্ষরিত পত্রে ৭দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ওই পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, কেডিএ অনুমোদিত সিদ্দিকুর রহমানের ভবনের সামনে ১০.৮২ ফুট জমি উন্মুক্ত রাখার কথা থাকলেও তিনি রেখেছেন মাত্র ২ফুট জমি। ভবনের ডান, বাম ও পিছনে ৩.৩ ফুট জমি রাখার স্থলে রাখা হয়েছে ১.৬ ফুট জমি।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের স্টেট অফিসার গাজী সালাউদ্দীন বলেন, “জনৈক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান কর্তৃক মিস্ত্রিপাড়ায় কেসিসি’র রাস্তা দখলের বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করে সীমানা প্রাচীর ও স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।” তিনি বলেন, “রাস্তা দখল করে কেউ একটা চুলও রাখতে পারবে না। উনি যদি রাস্তার জায়গা না ছাড়েন তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে মোঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “আমি রাস্তার কোনো জায়গা দখল করিনি। বাড়ির সামনে ৬ফুট রাস্তা ছিলো। যা আমার দলিলে উল্লেখ রয়েছে। বরং ক্রয়কৃত জায়গা থেকে ২ফুট রাস্তার জন্য ছেড়ে দিয়েছি।
সীমানা প্রাচীর ভেঙে পিলার রাখার ব্যাপারে তিনি বলেন, “পিলারগুলি ভাঙা সম্ভব না, কাটতে হবে। একারণে বিলম্ব হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, আমার ভবনের ভিতর রাস্তা বাধলে বা রাস্তা সম্প্রসারণে কেসিসি উদ্যোগ নিলে প্রয়োজনে ভবন ভেঙে জায়গা ছেড়ে দিবো।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button