দিঘলিয়ায় সরকারি ত্রাণের ঢেউটিন ও অর্থ বিতরণে হরিলুট

# পিআইও কর্মচারী নিয়েছেন ৫ বান্ডিল #
দিঘলিয়া প্রতিনিধি ঃ দিঘলিয়া উপজেলায় সরকারি ত্রানের ঢেউটিন ও অর্থ বিতরণে হরিলুট হয়েছে। সরকারি কর্মচারি, রাজনৈতিক দলের নেতা, তাদের আত্মীয় স্বজন এবং কিছু ভুয়া নাম ঠিকানা দিয়ে ১২০ বান্ডিল ঢেউটিন এবং নগদ অর্থ উত্তোলন করে নিয়েছে একটি চক্র। যা নিয়ে দিঘলিয়া উপজেলায় রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, দিঘলিয়া উপজেলায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও বসবাসের সুরক্ষা প্রদানে ৪ ধাপে ১২০বান্ডিল ঢেউটিন বরাদ্দ দেওয়া হয়।প্রতি বান্ডিল ঢেউটিনের বিপরীতে প্রদান করা হয় নগদ ৩ হাজার টাকা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দিঘলিয়া সদর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামে ৯জনকে ১৩ বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ৩৯ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে রতœা রানী দাসকে ২ বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ৩ হাজার টাকা, সীমা রানীকে ১বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ২ হাজার টাকা দেওয়া হয়। আফসানা আক্তার ২ বান্ডিল ঢেউটিন পেলেও তা বিক্রি করে দিয়েছেন। বাকী ৪জন যথাক্রমে,পারভিন হক,সেলিনা খাতুন,সালেহা বেগম ও শিরিনা বেগমের ঠিকানায় খুঁজে পাওয়া যায়নি।এছাড়া দিঘলিয়া উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরের অফিস সহায়ক মোঃ রুবায়েত হাসান পাঁচ বান্ডেল টিন ও নগদ অর্থ বরাদ্দ নিয়েছেন। এছাড়া বরাদ্দকৃত তালিকায় দেখা গেছে আর্থিক সচ্ছল কিছু রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী ও তাদের আত্মীয় স্বজনের নামে টিন ও নগদ অর্থ উত্তোলন করে নিয়েছেন। টিন উত্তোলনকারী অনেক নারীর এনআইডি কার্ডে স্বামীর নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কিন্ত উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের একটি সুত্র জানিয়েছেন কোন নারীর এনআইডি কার্ডে স্বামীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা নেই।সে ক্ষেত্রে দাখিলকৃত এনআইডি কার্ডের ফটোকপি গুলো ভূয়া বলে অবিহিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তালিকায় দেখা গেছে যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ। তালিকার ৬ নাম্বারে রয়েছে গোয়ালপাড়া গ্রামের সালেহা, রশিদ চৌধুরী। বরাদ্দ রয়েছে ২ বান্ডেল টি। কিন্তু রশিদ চৌধুরী উপকারভোগীর স্বামী নাকি পিতা তার কোনটি উল্লেখ নেই। ৫৯ নাম্বার এস এম ওয়াহিদুজ্জামান পিতার নামের স্থানে হাজী গ্রাম,দিঘলিয়া, খুলনা লেখা। পিতার নামের স্থলে রয়েছে গ্রামের নাম হাজীগ্রাম। এরকম অসংখ্য ত্রুটিপূর্ণ থাকা স্বত্তেও দিঘলিয়া উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তর ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বরাদ্দ করেছে। যা নিয়ে গোটা দিঘলিয়া উপজেলায় হৈচৈ পড়ে গেছে। এব্যাপারে উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ জামাল হুসাইন পূর্বাঞ্চলকে মুঠোফোনে বলেন,সরকারি কোন কর্মচারী ত্রাণের ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বরাদ্দ নিতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ জামাল হুসাইন বলেন,যেকোন দুঃস্থ সহায়সম্বলহীন মানুষকে সরকারি অনুদান প্রদান করার বিধান আছে। যাচাই-বাছাই করেই তালিকা প্রস্তুত করেছি। অনিয়ম হলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।
দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ হারুন অর রশিদ বলেন, ঢেউটিন বিতরণে অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগ শুনেছি। তদন্ত না করে কিছু বলতে পারছিনা।



