উপাধ্যক্ষসহ ৭ জনের বেতন বন্ধের প্রতিবাদে অভিভাবকদের মানববন্ধন

# দৌলতপুরে মুহসিন মহিলা কলেজ #
স্টাফ রিপোর্টার : নগরীর দৌলতপুরে মুহসিন মহিলা কলেজে উপাধ্যক্ষসহ ৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বন্ধের প্রতিবাদে ও অবৈধ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নওরোজী কবিরকে সরিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ বাস্তবায়নের লক্ষে কলেজের সামনে খুলনা-যশোর মহাসড়কে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় অভিভাবকদের সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তরা বলেন, বরখাস্তকৃত সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল লতিফের বিপুল অঙ্কের আর্থিক দুর্নীতির দায় আড়াল করতে বর্তমান অবৈধ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নওরোজী কবির শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছেন। কলেজের অভ্যন্তরীণ অডিটে বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে ১ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ৬৭৪ টাকা আত্মসাৎ ও প্রশাসনিক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ গত ৩১ জুলাই-২৫ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে এবং একই দিনে উপাধ্যক্ষ মো. মাহফুজার রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়।তবে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় আইন বর্হিভূত বরখাস্ত থাকা অবস্থায় গত ১৪ আগস্ট আব্দুল লতিফ সহকারী অধ্যাপক নওরোজী কবিরকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগপত্র দেন। পরবর্তীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ১০ সেপ্টেম্বর-২৫, ৯০৯৬ নং স্বারকের মারফত জানান,নওরোজী কবিরের দায়িত্ব গ্রহণ বিধি বহির্ভূত এবং বৈধ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হচ্ছেন কলেজের উপাধ্যক্ষ মোঃ মাহফুজার রহমান। ভূক্তভোগীগন জানান, বর্তমান সভাপতি সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল হোসেন ১৫ অক্টোবর-২৫ কলেজের দায়িত্বভার গ্রহন করেন। ১৭ নভেম্বর-২৫ কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল হোসেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে নওরোজী কবিরের ভূতাপেক্ষা নিয়োগ অনুমোদন করেন। কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এই অনুমোদন দেওয়া হলো এ বিষয়ে সভাপতি বলেন আমি নওরোজী কবিরকে নিয়োগ দেইনি। আমি দায়িত্ব গ্রহনের সময় ওনাকে পেয়েছি। ইতিমধ্যে এমপিও সম্পন্ন হয়ে বেতন আসা সত্ত্বেও নওরোজী কবির উপাধ্যক্ষসহ ৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন কোনো কারণ ছাড়াই স্থগিত রেখে অন্যদের বেতন ইএফটিতে সাবমিট করেছেন। ভুক্তভোগীরা আরো বলেন,বেতন সাবমিট করা হলে তার অবৈধ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে বেতন বন্ধ রেখেছেন। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি (নওরোজী) কোনো ব্যাখ্যা না দিয়ে এরিয়ে গিয়ে সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে বলেন। এ বিষয়ে কলেজ সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল হোসেন জানান, নওরোজী কবির একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই কাজ করছেন। এমপিওভুক্ত কারও বেতন বন্ধ রাখার কোনো বিধান নেই। তার এমন অযৌক্তিক সিদ্ধান্তে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, নওরোজী কবির প্রায় কলেজে বহিরাগত নিয়ে এসে দাপট দেখান এবং কোনো যৌক্তিক প্রশ্ন তুললে শিক্ষক-কর্মচারীদের অপমান করেন। এমনকি শিক্ষক প্রতিনিধি মো. জগলুল আলমকে কারণ জানতে চাওয়ায় তাকে শোকজ করা করেছেন। মানব বন্ধনে বক্তরা বলেন,ক্রমাগত অনিয়ম,বহিরাগতদের দাপট,আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ও প্রশাসনিক দ্বন্দ্বে কলেজের পরিবেশ অস্থির হয়ে উঠেছে। শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। তারা আশু সমাধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন; নইলে মুহসিন মহিলা কলেজে বড় ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দৌলতপুরে মুহসিন মহিলা কলেজে উপাধ্যক্ষসহ ৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বন্ধের প্রতিবাদে ও অবৈধ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নওরোজী কবিরকে সরিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ বাস্তবায়নের লক্ষে অভিভাবকদের সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত।


