স্থানীয় সংবাদ

দাকোপে পরিকল্পিত হামলার ঘটনায় বিচার চেয়ে খুলনা প্রেসক্লাবে অসহায় বাবার সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনার দাকোপ উপজেলায় জমিজমা ও ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে এক যুবকের ওপর সংঘটিত বর্বরোচিত হামলার বিচার দাবিতে এক অসহায় বাবা খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। রবিবার দুপুর ১২টায় আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ দুলাল সরদার তার ছেলে মেহেরাব সরদারের ওপর সংঘটিত হামলাকে পূর্বপরিকল্পিত হত্যাচেষ্টা বলে দাবি করেন। দুলাল সরদার লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রতিবেশী বাদশা হাওলাদার, হানিফ খা এবং তাদের কয়েকজন সহযোগীর সঙ্গে জমিজমা ও লেনদেনসংক্রান্ত কিছু বিরোধ ছিল। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে ওই পক্ষ একাধিকবার তার পরিবারকে হুমকি দিয়েছে এবং নানা সময় অপমানজনক আচরণ করেছে। তিনি দাবি করেন, তার পরিবার শান্তিপ্রিয় হওয়ায় এতদিন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। কিন্তু বিরোধপূর্ণ পক্ষ ধীরে ধীরে তাদের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ আচরণ বাড়িয়ে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত তার ছেলের ওপর প্রাণঘাতী হামলার মাধ্যমে চূড়ান্ত রূপ পায়। দুলাল সরদারের বর্ণনা অনুযায়ী, ৩ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে মেহেরাব বাড়ির পাশে তাদের নিজস্ব মুরগির ফার্মে বই পড়ছিল। সে সময় পরিকল্পিতভাবে কয়েকজন তাকে ডেকে নিয়ে যায়। তারা মেহেরাবকে বলে যে তাদের বাড়িতে কোনো ঝামেলা হয়েছে যেন সে গিয়ে দেখে। বিশ্বাস করে সে প্রতিবেশীর বাড়িতে গেলে অতর্কিতে কয়েকজন তাকে ধরে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। তিনি অভিযোগ করেন, সেখানে তার ছেলের ওপর একদল ব্যক্তি শারীরিক আঘাত হানে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর ক্ষতি করার চেষ্টা করে। এসব আঘাতে মেহেরাব মারাত্মকভাবে আহত হয়। তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা থেমে না থেকে পুনর্বার আক্রমণের চেষ্টা করে, যা তিনি হত্যাচেষ্টা বলে দাবি করেন। হামলার শব্দ শুনে প্রতিবেশী তামান্না বেগম ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ করেন দুলাল সরদার। এতে তিনিও আহত হন। হামলার সময় মেহেরাব চিৎকার করলে পরিবারের সদস্য এবং আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে দ্রুত দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন এবং এখনও শঙ্কামুক্ত নন বলে পরিবারের দাবি। আহত তামান্না বেগম দাকোপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পরিবার, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের পরামর্শে ৬ ডিসেম্বর দাকোপ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। দুলাল সরদার বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী বিজয় গাইন, পুতুল প্রামাণিকসহ একাধিক ব্যক্তি তদন্তে সহায়তা দিতে পারবেন এবং ঘটনার সত্যতা প্রমাণ করতে পারবেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে দুলাল সরদার বলেন, আমার ছেলে আজ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকি। হামলাকারীরা প্রকাশ্যেই বলেছে আজ পারিনি, সুযোগ পেলেই খুন করে ফেলব। দুলাল সরদার হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা, তার পরিবারকে যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে পরিকল্পিত হামলা ও হত্যাচেষ্টার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতকরণের দাবি জানান।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button