স্থানীয় সংবাদ

দাকোপে আওয়ামী ইউপি চেয়ারম্যান জালালকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগের দাবি

জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার : খুলনার দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন গাজীর অপসারণ দাবি করেছেন স্থানীয়রা। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) খুলনা জেলা প্রশাসক এবং রবিবার (৭ ডিসেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করে আবেদন করেছেন ৭নং তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ।
লিখিত আবেদনে তারা বলেন, জনসাধারণ দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে আর্জিত ২৪’র নতুন বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোষর তিলডাঙ্গা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন গাজী মোটা অংকের আর্থিক লেনদেন করে নিজেদের চেয়ার টিকিয়ে রেখেছে। আওয়ামী স্টাইলে দিনের ভোট রাতে করে একাধিকবার চেয়ারম্যানের চেয়ার দখল শুধুই নয় সিলেকশন প্যানেল চেয়ারম্যানসহ পরিবারের একাধিক সদস্যকে মেম্বারের চেয়ারে বসিয়ে ইউনিয়ন পরিষদকে পরিবার পরিষদ তৈরি করেছে। দীর্ঘ ১৭ বছরে তিনি ও তার পরিবার গড়ে তুলেছেন এক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট, যার শিকড়ে মিশে আছে রাজনীতি, অর্থ এবং ভয়ভীতি। বিগত দিনে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে রাজনৈতিক মিথ্যা ভিত্তিহীন মামলায় জড়িয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি নিজস্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত ভাবে ইউনিয়নের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ নিন্ম মানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে একাধিকবার জনসাধারণের কাছে অবরুদ্ধ হয়েছেন। এমন কি চলমান উন্নয়ন কাজ বন্ধ করতেও বাধ্য হোন। পরবর্তীতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করে পুনরায় কাজ সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করছে। এ সকল কাজ তার ছেলে দাকোপ উপজেলা যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম করে আসছেন। তিনি বয়স্ক ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফ সহ সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা সব দলীয় পরিচয় দেখে বন্টন করছে।
তার সিন্ডিকেট সদস্যের মধ্যে আওয়ামী পদধারী নিবোদ গাইনের ছেলে মকুল গাইন, দিনোবন্দ মন্ডলের ছেলে ইন্দ্র কিশোর মন্ডল, সুবোধ মিস্ত্রীর ছেলে সুশিল মিস্ত্রীসহ কয়েকজনের রয়েছে। এই সিন্ডিকেট গ্রুপের কাছে ইউনিয়নের জনসাধারণকে জিম্মি করে রেখেছে। জালাল উদ্দীনের দাপটে এক প্রকার তার হাতে জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন ইউনিয়নবাসী। জালাল উদ্দীনকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ করার দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ ১৭ বছরে জালাল উদ্দীন ও তার পরিবার গড়ে তুলেছেন এক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। যার শিকড়ে মিশে আছে রাজনীতি, অর্থ এবং ভয়ভীতি। এলাকাবাসীর একাংশ দাবি করছে, এই পরিবার এখনো টিকে আছে ‘রাতের ভোটের’ ফল হিসেবে, এবং তারা নয়া বাংলাদেশে পুরনো শাসনের প্রতিচ্ছবি বহন করছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে এলাকা ছাড়া করার অভিযোগ নতুন কিছু নয়।
প্রশ্নবিদ্ধ জমিতে ‘জালালাবাদ’ নামে একটি এলাকা গড়ে তুলেছেন। যেখানে নিয়মের তোয়াক্কা না করে সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগে ইউনিয়নবাসী পরিষদে চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
চেয়ারম্যান গাজীর নিজস্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিতভাবে ইউনিয়নের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পেয়ে আসছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব কাজের বেশিরভাগই নিয়েছেন নিজের ছেলে যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলামের নামে। কাজের কমিশন পৌঁছাত শেখ পরিবারের নির্দিষ্ট ঠিকানায়- এমনটাই দাবি করেছেন একাধিক স্থানীয় ঠিকাদার।
জানা গেছে, সাবেক ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী এমপি ননী গোপালের অর্থদাতা এবং ‘অঘোষিত পরামর্শক’ ছিলেন জালাল গাজী। শেখ পরিবারের ছত্রছায়ায় তার চেয়ারম্যান হওয়াও ছিল ‘নির্ধারিত’ বলেই অনেকে মনে করেন। সোস্যাল মিডিয়ায় আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে ছবি পোস্ট করে নিজের অবস্থান জানান দিতেন তিনি। যে সকল ছবি এলাকার জনসাধারণ কাছে প্রমাণ স্বরূপ রয়েছে।
এ বিষয়ে জালাল উদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমি কখনো আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না। থাকলে তো বাড়ি ঘরে থাকতে পারতাম না। ৫ আগস্টের পর গাঁ ঢাকা দিতাম। এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখেন আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ঠিক না। তবে সম্প্রতি কিছু উচ্ছৃখল লোকজন পরিষদে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে, তা তাৎক্ষণিক মেম্বারদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয় বলেও দাবি করেন তিনি।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button