নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্যেই ওসমান হাদীর ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছে

# খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদীর ওপর হত্যাচেষ্টা কোনো সাধারণ ঘটনা নয় বলে মন্তব্য করেছেন খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য, খুলনা-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্যেই ওসমান হাদীর ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। সারা দেশে যখন বিএনপির পক্ষে ব্যাপক জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, ঠিক তখনই সেই গণজাগরণ প্রতিহত করার লক্ষ্যেই এই হামলা সংঘটিত হয়েছে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল পুর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নজরুল ইসলাম মঞ্জু আরও বলেন, আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনের খবরে দিশেহারা একটি গোষ্ঠী অস্থির হয়ে উঠেছে। দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই তারা এ ধরনের ন্যাক্কারজনক হামলা ঘটাতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। মঞ্জু অবিলম্বে হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও খুলনা-৩ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল বলেছেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও ষড়যন্ত্র এখনো থামেনি। জনগণের লুণ্ঠিত ভোটাধিকার যতক্ষণ পর্যন্ত ফিরে না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত রাজপথের এই আন্দোলন ও সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। বকুল বলেন, ‘‘দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দলনে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অসংখ্য নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। কিন্তু একটি অশুভ চক্র এখনো নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।’’ ওসমান আবীর ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি চব্বিশের জুলাই যোদ্ধা ওসমান আবীর মাথায় নির্মমভাবে গুলি করা হয়েছে। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়। অবিলম্বে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটের তারিখ গ্রহণ করেছে। আমরা আশঙ্কামুক্ত হতে চাই। প্রশাসন ও সরকারের কাছে দাবি, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করুন যাতে মানুষ নির্বিঘেœ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। ভোটের মাধ্যমে জনগণ তাদের পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচন করবে, এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটি সুশৃঙ্খল দল। দলে কোনো বিভেদ রাখা যাবে না। ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি মেনে প্রতিটি এলাকায় ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালাতে হবে এবং আগামী নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ বক্তার বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও খুলনা-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আজিজুল বারী হেলাল বলেছেন, খুনি হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং সেখান থেকেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। ভারত তাকে আশ্রয় দিয়ে এই ষড়যন্ত্রে ইন্ধন যোগাচ্ছে। তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা চুপ করে থাকবেন না। খুলনা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন খুলনায় এক আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আমির এজাজ খান, সৈয়দা নার্গিস আলী, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, আসাদুজ্জামান আসাদ, শেখ ইমাম হোসেন, বিপ্লবুর রহমান কুদ্দুস, এবাদুল হক রুবায়েত, মজিবুর রহমান, সজীব তালুকদার, আবু সাঈদ প্রমূখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন আশরাফুল আলম খান নান্নু ও ইস্তিয়াক আহমেদ ইস্তি। এ সময় মহানগর ও জেলা, থানা, উপজেলা, ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।


