রাজশাহীতে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে আগুন : পুলিশের গাড়িতে ককটেল নিক্ষেপ
প্রবাহ রিপোর্ট : রাজশাহীতে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়াও টহলরত পুলিশের গাড়িতে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হলেন- কনস্টেবল মো. জাহিদুল ও শামীম হায়দার। গত বুধবার দিবাগত রাতে রাজশাহীর নগরীর উপকণ্ঠ এলাকায় এই ঘটনাগুলো ঘটে। রাত সাড়ে ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে নগরীর সিটিহাট এলাকায় ফিলিং স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এর আগে, রাত ১০টার দিকে নগরীর উপকণ্ঠ বায়া বাজার এলাকায় টহলরত পুলিশের গাড়িতে ককটেল নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। জানা গেছে, গত বুধবার শাকিল হোসেনের মালিকানাধীন একটি ট্রাক (রাজ মেট্রো ট-১১-০১০৩) তার ড্রাইভার গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ী লাল পুকুর এলাকার আজিজুল হক নগরীর সিটিহাট পূর্ব পাশে ছন্দা ফিলিং স্টেশনে রেখে বাড়ি চলে যান। গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে দুর্বৃত্তরা ট্রাকটির সামনে চালকের কেবিনে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয়া আগুন দেখতে পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরের খবর দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদরদপ্তরের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সামার নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ছন্দা পেট্রোল পাম্পের গার্ড জাহাঙ্গীর বলেন, সিটি হাটের দিক থেকে দুইটি মোটরসাইকেলে করে চার ব্যক্তি এসে ট্রাকটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও পুড়িয়ে মারার হুমকি দেন। আমি দৌড়ে অন্যান্যের ডাকতে গেলে তারা রাস্তাতেও পেট্রোল বোমা মারে। এতে রাস্তাতেও আগুন ধরে যায়। দুর্বৃত্তরা সিটি হাটের দিকে চলে যায়। শাহমখদুম থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, সিটিহাটের পাশে পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকে পেট্রোল বোমা মারে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ট্রাকে আগুন ধরে যায়। বোমা হামলা করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন স্থানীরা। তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে দুইটি অবিস্ফোরিত পেট্রোল বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এয়ারপোর্ট থানার ওসি এমরান হোসেন বলেন, গত বুধবার রাতে এয়ারপোর্ট থানার বায়া বাজার সংলগ্ন মাছের আড়তের কাছে টহল পুলিশের গাড়িকে লক্ষ্য করে কে বা কারা একটি ককটেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ককটেলটি বিস্ফোরণ হয়। নিক্ষেপের পরপরই তারা পার্শ্ববর্তী ফাঁকা বরই (কুল বাগান) বাগানের দিকে পালিয়ে যায়। গাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দুই কনস্টেবল শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন। চিকিৎসার জন্য তাদের রাজশাহী জেলা পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে। এদিকে, বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপী ষষ্ঠ দফার অবরোধের শেষ দিন ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। কিন্তু রাজশাহীর সড়কগুলোতে অবরোধের প্রভাব দেখা যায়নি। সকাল থেকেই যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। দিন শুরু হতেই বেড়েছে মানুষের ভিড়। সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকেই রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার, লক্ষ্মীপুর, কোর্ট, বর্ণালী মোড়, কামারুজ্জামান চত্বর, স্টেশন, ভদ্রা, তালাইমারী ও বিনোদপুরে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। অন্য দিনের তুলনায় এ দিন সড়কগুলোতে যান চলাচল ও মানুষের উপস্থিতি অনেকটা বেশি। এ ছাড়া বিশৃঙ্খলা ও নাশকতার ঘটনা এড়াতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি সড়কে সতর্ক রয়েছে পুলিশ। নগরীর ভদ্রা থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল স্বাভাবিক আছে। রেলগেট থেকেও বিভিন্ন উপজেলা ও জেলার বাস ছেড়ে যাচ্ছে। এ দিন ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন রুটের বাস ছাড়ার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। বিকাল থেকে গাড়ি চলাচল শুরু করবে। গত বুধবার রাতে বেশ কিছু বাস ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।