জাতীয় সংবাদ

ইতালিতে বাংলাদেশি যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

প্রবাহ রিপোর্ট : ইতালিতে সুমন মিয়া (২৫) নামে এক বাংলাদেশি যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। রাজধানী রোমের তুসকোলানা জুলিও আগ্রিকোলা পার্কে একটি গির্জার পেছন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও দূতাবাসের ধারণা ২৩ জানুয়ারি রাতে তিনি আত্মহত্যা করেন। ইতালি এক প্রবাসী বলেন, সুমন মিয়া সাত মাস ধরে বেকার থেকে হতাশায় ছিলেন। জানা গেছে, ঘটনার পরের দিন সকাল আনুমানিক ৭টায় ওই যুবকের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে পুলিশে খবর দেন পথচারীরা। পরে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে সুমন আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। কয়েক মাসে আগে তিনি ইতালিতে এসেছিলেন। তার দেশের বাড়ি কুমিল্লার নীলখী পরবো, হোমনা চম্পক নগরে। বাবা এ বারিক। এ বিষয়ে রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম ও কল্যাণ) আসিফ আনাম সিদ্দিকী জানান, ঘটনাটি তারা জেনেছেন। এ ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার সত্যতা পাওয়া গেছে। পুলিশের পুরোপুরি ক্লিয়ারেন্স না পাওয়া পর্যন্ত দূতাবাস কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। তবে দূতাবাস এরইমধ্যে তার পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী দেশে যোগাযোগ করেছে। তার পরিবারের সঙ্গে মৃত্যুর আগের দিন সুমনের কথা হয়। তবে তিনি যে এমন কা- করবেন পরিবার কল্পনা করেনি। দূতাবাস জানায়, সুমন যে হতাশায় ভুগছেন তা পরিবারের কেউ কিছু জানে না। আসিফ বলেন, পুলিশের তদন্ত পুরোপুরি শেষ হলে দূতাবাস পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। এদিকে তার মৃত্যুতে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। এ নিয়ে কুমিল্লার মুরাদ মহিবুর নামে ইতালি প্রবাসী একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তা হুবহু তুলে ধরা হলো। ‘হায় রে ইউরোপ! স্বপ্নের ইউরোপ! স্বপ্নের ইতালি! এক বুক স্বপ্ন নিয়ে কুমিল্লার সুমন মিয়া সাত মাস আগে ইতালির রোম শহরে আসেন। টগবগে এই যুবক এসেছেন ইউরোপের উন্নত দেশ ইতালিতে সোনার হরিণ ধরতে। নিজকে এবং নিজ পরিবারকে প্রতিষ্ঠিত করতে। স্বপ্ন আর বাস্তব বড়ই কঠিন। দীর্ঘ সাত মাস বেকার থেকে কোনো কাজ না পেয়ে এক নিষ্ঠুর আত্মসমর্পণ। গলায় ফাঁস দিয়ে তরতাজা জীবনটাকে শেষ করে দিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। আমি তার এমন মৃত্যুতে মর্মাহত এবং শোকাহত। এমন নির্মম মৃত্যু কারোই কাম্য নয়। আশা করি নতুন যারা আসবেন কিংবা আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলি যদি কেউ আসতে চান অবশ্যই লিগ্যাল ওয়েতে স্পন্সর ভিসায় আসবেন। তিনি আরও লেখেন, কৃষি ভিসায় এসে এখানে তেমন কোনো কাজ নেই। তাই একান্ত কোনো নিজস্ব আপনজন না থাকলে আমি বলি না আসাটাই ভালো। কারণ এগ্রিকালচার ভিসায় এসে কোনো কাজ পাওয়া যায় না। অনেক কষ্ট করতে হয়। এর মাঝে বাসা ভাড়া এবং নিজের ব্যক্তিগত খরচ বাবদ প্রতি মাসে ৪০০ ইউরো যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। নতুন এসে এই টাকা ইনকাম করাটা কষ্টদায়ক। এটাই চিরন্তন সত্য। কাজ না পাওয়ার কারণ। প্রথমত ভাষাজনিত সমস্যা, দ্বিতীয়ত ডকুমেন্ট সমস্যা। তাই অবশ্যই এগ্রিকালচার ভিসায় না এসে চেষ্টা করবেন লিগ্যাল ওয়েতে স্পন্সর ভিসায় আসতে। লিগ্যাল ওয়েতে এলে অন্ততপক্ষে একটা কাজ এবং একটা ডকুমেন্টের আশা করা যায়। যা থাকলে অনেকটা হতাশামুক্ত হওয়া যায়। একটা কাজ পাওয়ার আশা করা যায়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button