পিটার হাসের উপস্থিতিসহ দ্বাদশ সংসদের ১ম দিন যা যা হলো

প্রবাহ রিপোর্ট ঃ দলীয় এমপির পাশাপাশি রেকর্ড ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে অধিবেশনের শুরুতে প্রথমে স্পিকার ও পরে ডেপুটি স্পিকার পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। স্পিকার পদে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার পদে অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকু পুননির্বাচিত হন আগের সংসদের স্পিকার আবারও প্রার্থী হওয়ায় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। নতুন সংসদের প্রথম অধিবেশনের ১ম দিন উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ দেশি-বিদেশি কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ আরও অনেক ব্যক্তিবর্গ ও তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ পাঁচ শতাধিক অতিথি। প্রথম অধিবেশনকে ঘিরে পুরো সংসদ ভবন নবীন-প্রবীণ এমপিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। ৩শ সংসদ সদস্যের পাশাপাশি কয়েকশ অতিথির উপস্থিতিতে সংসদকক্ষের ভিআইপি গ্যালারি ও দর্শনার্থী গ্যালারি পরিপূর্ণ হয়ে যায়। সূচনা অধিবেশনের ১ম দিন ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তার ভাষণের পর সংসদের অধিবেশন ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। অধিবেশনের শুরুতে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। এরপর দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী স্পিকার পদে নির্বাচন হয়। স্পিকার পদে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রস্তাবটি সমর্থন করেন সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন। এরপর কণ্ঠভোটে তা পাস হয়। সংসদ ভবনে অবস্থিত রাষ্ট্রপতির দপ্তরে স্পিকারকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শপথ গ্রহণ শেষে সংসদ অধিবেশন পরিচালনায় আসেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এরপর ডেপুটি স্পিকার পদে নির্বাচন হয়। এ পদে পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর নাম প্রস্তাব করেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এবি তাজুল ইসলাম এবং সমর্থন করেন মকবুল হোসেন। প্রস্তাবটি ভোটে দিলে সংসদ সদস্যরা ‘হ্যাঁ’ বলে সমর্থন জানান। দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত ডেপুটি স্পিকারকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সভাপতিম-লী মনোনয়ন ঃ ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন শেষে নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ সদস্যের সভাপতিম-লী মনোনয়ন দেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তারা হলেন, এবি তাজুল ইসলাম, শাহাব উদ্দিন, আ ফ ম রুহুল হক, হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ ও উম্মে কুলসুম। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে নামের অগ্রবর্তিতা অনুসারে সভাপতিম-লীর সদস্যরা সংসদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন। শোক প্রস্তাব উত্থাপন ঃ সভাপতিম-লী মনোনয়নের পর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শোক প্রস্তাবটি পেশ করেন। শোক প্রস্তাবে কুয়েতের আমির শেখ নাওয়াফ আল আহমদ আল জাবের আল সাবাহ’র মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। এছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেসা তালুকদার, সাবেক সংসদ সদস্য ড. মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীসহ বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। এরপর শুরু হয় রাষ্ট্রপতির ভাষণ। প্রধানমন্ত্রীর চিরকুট ঃ অধিবেশনের শুরুর দিকে স্পিকার নির্বাচন করা হয়। এরপরই শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সমাজ কল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এরপর বক্তব্য দিতে শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে ফ্লোর দিলে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী হাত তোলেন। স্পিকার ইশারায় তাকে বসার অনুরোধ জানিয়ে শেখ সেলিমকে ফ্লোর দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাতের ইশারায় লতিফ সিদ্দিকীকে বসার অনুরোধ জানান। পরে বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদেরকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ফ্লোর দেন স্পিকার। তখন আবারও দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখার জন্য হাত তোলেন লতিফ সিদ্দিকী। সেবারও তাকে বসার অনুরোধ জানান স্পিকার। এরপর প্রধানমন্ত্রী কাগজে একটি চিরকুট লিখে পাঠান লতিফ সিদ্দিকীর কাছে। তাতে কী লেখা ছিল তা জানা না গেলেও এরপর আর বক্তব্য রাখার জন্য দাঁড়াননি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত এমপি লতিফ সিদ্দিকী।