জাতীয় সংবাদ

ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত বাজুস ফেয়ার

প্রবাহ রিপোর্ট : রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে শুরু হওয়া বাজুস ফেয়ার প্রথম দিনেই জমে উঠেছিল। তিন দিনব্যাপী এই মেলার দ্বিতীয় দিনে সপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় আরও বেশি মুখরিত হয়ে ওঠে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাজুস ফেয়ার ঘুরে দেখা যায়, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বাজুস ফেয়ারে এসেছেন অনেকে। তারা মেলার বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে পছন্দের গহনা ও জুয়েলারি দেখছেন ও কিনছেন। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের অফার দিচ্ছে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো। স্বর্ণের গয়না কিনলে মজুরির ওপর দেওয়া হচ্ছে আকর্ষণীয় ছাড়। ডায়মন্ডের গয়নাতেও দেওয়া হচ্ছে ছাড়। এ ছাড়া গিফট ভাউচার, র্যাফেল ড্র ও গেম খেলে পুরস্কার জিতে নেওয়ার সুযোগ থাকছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য।
এক প্ল্যাটফর্মে অনেক জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছেন ব্যবসায়ী নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, সামনে ছোট ভাইয়ের বিয়ে। বাজুস ফেয়ারে এক প্ল্যাটফর্মে অনেক দোকান পাওয়া যায়। তাই এই মেলায় এসেছি বিয়ের জন্য গহনা দেখতে। যদি পছন্দ হয় অর্ডারও দিয়ে যাবে। কারণ মেলায় সাধারণ দোকানের থেকে ভালো ডিজাইন ও কালেকশন পাওয়া যায়। পছন্দ করতেও সুবিধা হয়। আবার মেলাটাও ঘরের কাছে। গত বছরও এসেছিলাম, এ বছরও এলাম। মিরপুর ২ নম্বর থেকে একাই বাজুস ফেয়ারে এসেছেন গৃহিণী আয়শা সিদ্দিকী। তিনি বলেন, একটি নোজ পিন কিনব। মেলায় যেহেতু বিভিন্ন ধরনের অফার দেওয়া হয়, তাই এখানে এসেছি। এক জায়গায় অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান হওয়ায় নোজ পিন কিনতে সুবিধা হবে বলে মনে হচ্ছে। এবার বাজুস ফেয়ারে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভালো সাড়া পাচ্ছেন বলে জানিয়েছে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় অনেক বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। আমিন জুয়েলার্সের সেলস এক্সিকিউটিভ সুবীর বলেন, বাজুস ফেয়ারে প্রতিবারই ক্রেতা ও দর্শানার্থীদের ভালো সাড়া থাকে। এবার সেটি অনেক বেশি। শনিবারের তুলনায় গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের ভিড় অনেক বেশি। সন্ধ্যায় সেটি আরও বাড়বে। মেলায় জুয়েলারি বিক্রি মূল উদ্দেশ্য নয়। তারপরও ভালোই বিক্রি হচ্ছে। আপন জুয়েলার্সের সেলস এক্সিকিউটিভ আজাদ বলেন, মেলা মানে আনন্দ ফূর্তি। ফলে বাজুস ফেয়ারে বরাবরই দর্শনার্থীদের ভালো সাড়া থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। দর্শনার্থীর পাশাপাশি ক্রেতাদেরও ভালো সাড়া পাচ্ছি। গতকাল শুক্রবার বিকেল ও শনিবারে সাড়া অনেক বাড়বে বলে প্রত্যাশা। গত বৃহস্পতিবার সকালে আইসিসিবিতে ‘সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হয় তিন দিনের বাজুস ফেয়ার ২০২৪। মেলার উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর। বিশ্ববাজারে দেশের স্বর্ণশিল্পীদের হাতে গড়া অলঙ্কারের পরিচিতি বাড়াতে এই মেলার আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ সফল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের পরিকল্পনায় দেশের ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো এ মেলার আয়োজন করছে বাজুস। দেশের অর্থনীতিতে অনবদ্য ভূমিকা রাখা বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্পের সবচেয়ে বড় আয়োজন বাজুস ফেয়ার ২০২৪ চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আইসিসিবির নবরাত্রি হলে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে মেলা। বাজুস ফেয়ারে প্রবেশ টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ১০০ টাকা। পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকিট লাগবে না। এছাড়াও জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে বিশেষ অফার দিচ্ছে। এবার বাজুস ফেয়ারে নয়টি প্যাভিলিয়ন, ১৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ১৫টি স্টলে দেশের স্বনামধন্য ৪১টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button