জাতীয় সংবাদ

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

এফএনএস : বাঙালীর ইতিহাসের আলোকিত অধ্যায় ভাষা আন্দোলন। ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত চলা আন্দোলনে অসংখ্য নারী-পুরুষ যোগ দিয়েছিলেন। মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষায় রাজপথে প্রাণ দিয়েছিলেন বরকত, রফিক, শফিক, জব্বাররা।
সঙ্গত কারণেই স্বপ্ন ছিল, সর্বস্তরে প্রচলিত হবে বাংলা। কিন্তু স্বাধীনতার দীর্ঘ বছর পরও সেটি সম্ভব হয়নি। সরকারী বেসরকারী অফিস আদালত, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান সর্বত্রই মতৃভাষা উপেক্ষিত। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াতে মরিয়া বাবা মা। অথচ বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে নিজের শিশুকে ধারণা দেয়ার কোন তাগিদ তারা বোধ করেন না। ফলে বাচ্চারা ইংরেজী শিখছে ঠিকই কিন্তু ভুলে যাচ্ছে নিজেকে। শেকড়হীনভাবে বেড়ে উঠছে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রেও এ সমস্যা প্রকট। সহায়ক পুস্তকগুলোর অধিকাংশই লেখা ইংরেজীতে। চিকিৎসা, বিজ্ঞান, প্রকৌশল, কৃষি বিষয়ে বাংলায় লেখা পুস্তক এখন নেই বললেই চলে। তাই অনুবাদের উদ্যোগ নেয়া জরুরি। বাংলা একাডেমীর একটি অনুবাদ সেল আছে। তবে এটি ব্যাপকভাবে কাজ করতে পারছে না। এ অবস্থায় সরকারী উদ্যোগে বড় অনুবাদ প্যানেল করে কাজটিকে এগিয়ে নেয়া যেতে পারে। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের কেউ কি এ নিয়ে ভাবছেন?
এবার আসা যাক আদালতের কথায়। সংবিধানের রক্ষক হয়েও বিচার বিভাগ রাষ্ট্রভাষা বাংলাকে কদর করতে শেখেনি। উচ্চ আদালতের প্রায় সব রায় ইংরেজীতে লেখার পুরনো রেওয়াজ এখনও চালু আছে। বড় বড় ব্যানার বিলবোর্ডেও ইংরেজী। বাড়ির নামকরণেও আছে ইংরেজী শব্দের ব্যবহার। ব্যাধিগুলোর আরেকটি হচ্ছে, উচ্চারণ বিকৃতি। এফএম রেডিও এবং টেলিভিশন নাটকে এ বিকৃতি দিন দিন বাড়ছে। বেসরকারি রেডিওগুলো শোনলে লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে আসে। বাংলা ইংরেজী প্রমিত আঞ্চলিক মিলিয়ে এক খিচুড়ি ভাষা প্রবর্তন করেছে রেডিওগুলো। লাফাঙ্গা ধরনের নির্মাতারা ভাষার বিকৃতি করছেন নাটকে। তরণ তরুণীরা এসব দেখে দারুণ প্রভাবিত হচ্ছে। ফলে শুদ্ধতা নষ্ট হচ্ছে বাংলা ভাষার। এভাবে চলতে থাকলে দুঃখজনক পরিণতি নেমে আসতে পারে। এসব ব্যাপারে তাই এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন ভাষাসৈনিক ও সংগ্রামীরা।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button