ঘুমের ইনজেকশনের লেবেল পাল্টে চেতনানাশক প্যাথিডিন, গ্রেপ্তার ৩
প্রবাহ রিপোর্ট : জি-ডায়াজিপাম নামের ঘুমের ইনজেকশনের লেবেল পাল্টে চেতনানাশক জি-প্যাথিডিন ইনজেকশনে রূপান্তর করা চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তাররা হলেন—আলমগীর খান (৪০), মাসুদ রানা (২৯) ও আহসান হাবীব শাওন (৩০)। গত সোমবার মতিঝিল, বাড্ডা ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি মতিঝিল বিভাগ। এ সময় গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে জি-প্যাথিডিন ইনজেকশন ২০০ পিস, ২২০ পিস জি-প্যাথিডিনের অ্যাম্পুল, এক হাজার ১০ পিস জি-ডায়াজিপামের অ্যাম্পুল, ৫২০ পিস জি-প্যাথিডিনের খালি বাক্স, ২০০ পাতা জি-প্যাথিডিন ইনটেক স্টিকার, ৫ কেজি এসিডসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। ডিবি জানায়, গ্রেপ্তার আলমগীর মিটফোর্ট এলাকা থেকে ঘুমের ইনজেকশন প্রতি পিস জি-ডায়াজিপাম ৮ টাকায় কেনেন। বাসায় এনে অ্যাম্পুলগুলো এসিডে ভিজিয়ে রেখে লেবেলগুলো তুলে ফেলেন। পরে সেগুলোতে ব্যথানাশক জি-প্যাথিডিনের লেবেল লাগিয়ে ফয়েল পেপার দিয়ে প্যাকেটজাত করেন। ৮ টাকায় কেনা জি-ডায়াজিপাম ইনজেকশনের লেবেল পাল্টে প্রতি পিস ৬০০ টাকায় বাজারজাত করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি। এ বিষয়ে ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, প্যাথিডিন ইনজেকশন সাধারণত অপারেশনে চেতনানাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই ভেজাল প্যাথিডিন প্রয়োগে নানা দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। ঘুমের ইনজেকশন কেনা ও লেবেল পাল্টাতে পিস প্রতি ৮-১০ টাকা খরচ করে প্যাথিডিনে রূপান্তর করে ৬০০ টাকায় বিক্রি করতো চক্রটি। এতে প্রতি পিসে তাদের লাভ প্রায় ৫৯০ টাকা। ডিবিপ্রধান বলে, প্যাথিডিন ইনজেকশন ব্যবহার করতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন নামিদামি হাসপাতালের ফার্মেসিতে এসব ভেজাল প্যাথিডিন ইনজেকশন বিক্রি করা হতো। তথ্যের ভিত্তিতে বারিধারা জেনারেল হাসপাতালের ফার্মেসিতে অভিযান চালিয়ে ২০০ পিস ভেজাল প্যাথিডিনসহ সেখান থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, এসব ভেজাল ওষুধ বিক্রি করে একদিকে মুনাফা করে আসছিল, অন্যদিকে রোগীদের ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে চক্রটি। মিটফোর্ডে কারা কারা এসব ঘুমের ইনজেকশন বিক্রি করতো এবং কোন কোন স্থানে এসব প্যাথিডিন বিক্রি করা হচ্ছে এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই প্যাথিডিন ইনজেকশন প্রয়োগে কেউ মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েছে কি-না এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।