দু’দিনের কর্মবিরতিতে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

প্রবাহ রিপোর্ট : এক সপ্তাহের কর্মবিরতি শেষ হওয়ার পর আবারও কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এবার দুইদিনের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. নুরুন্নবী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ইন্টার্ন ডাক্তার এবং পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ডাক্তারদের বকেয়াসহ ভাতা পরিশোধ এবং ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে ২৩ মার্চ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ হয় এবং দাবির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। এই ৪৮ ঘণ্টা (২৪ ও ২৫ মার্চ) দেশের সকল ট্রেইনি ডাক্তার এবং ইন্টার্ন ডাক্তার (ইর্মাজেন্সি এবং ক্যাসুয়ালিটি ডিউটি ছাড়া) সকল ধরনের ডিউটি থেকে কর্মবিরতিতে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজেও (চমেক) চলছে বেসরকারি পোস্টগ্রাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের কর্মবিরতি। প্রশিক্ষণার্থী ডা. রাকিব আদনান চৌধুরী বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় সংগঠনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে কর্মবিরতি পালন করছি। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের যৌথ ৪টি দাবি হচ্ছে: ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন ৩০ হাজার টাকা এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের বেতন বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করতে হবে। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকদের (এফসিপিএস, রেসিডেন্ট ও নন রেসিডেন্ট) বকেয়া ভাতা প্রদান করতে হবে। ১২টি প্রাইভেট ইন্সটিটিউটের নন-রেসিডেন্ট ও রেসিডেন্টদের আকস্মিক ভাতা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে ভাতা পুনর্বহাল করতে হবে। অবিলম্বে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে। এ সময় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে অবস্থান করা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের কাছে ৪ দাবি ও কর্মবিরতির কথা জানান এসব চিকিৎসকরা। পরবর্তিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাদের উদ্দেশে বলেন, আমি তোমাদের কাজটা হাতে নিলাম। কাল বা পরশু সময় করে একটি মিটিং করবো বিষয়টি নিয়ে। যত দ্রুত সমাধান করা যায় সেটি আমি করবো। এরপর তোমাদের জানাবো। তিনি বলেন, আগে তোমাদের দাবি দাওয়া নিয়ে কি হয়েছে সেটি আমাকে বলবে না। আমি নিজে চিকিৎসক, কাজেই আমি তোমাদের সবকিছু জানি। সব চিকিৎসকের মানসম্মান নির্ভর করে তোমাদের ওপর। তোমরা যদি ভালো কাজ করো তাহলে সবাই আমার প্রশংসা করবে। দরকার হলে আমি এটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করবো। কারণ তোমাদের ভালোভাবে রাখতে না পারলে আমি কাজ আদায় করতে পারবো না, জনগণ চিকিৎসা সেবা পাবে না। কাজেই তোমরা যে যার ঘরে চলে যাও।
ঢাকা মেডিকেল ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাজে যোগদান: এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। শুধু ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে যোগদান করেছেন। গতকাল শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন পরিষদের সভাপতি জাবের মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে এক ঘণ্টা মিটিং হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে যাচ্ছি না। কারণ ঢাকা মেডিকেল হচ্ছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় হাসপাতাল। তবে অন্য হাসপাতালের যারা কর্মবিরতি করছে তাদের সঙ্গে আমাদের একাত্মতা আছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী যখন আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন এবং পরিচালক আগামীকাল (আজ রোববার) আমাদের বিষয় নিয়ে মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলবেন। তাই আগামীকাল (আজ রোববার) পর্যন্ত আমরা অপেক্ষায় থাকলাম আপাতত আমরা কর্মবিরতি স্থগিত করে কাজে ফিরে যাচ্ছি। আমাদের দাবি না মানলে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে।