দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা ভোটের তফসিল হতে পারে ১ এপ্রিল
প্রবাহ রিপোর্ট : আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের তফসিল আগামী ১ এপ্রিল ঘোষণা করা হতে পারে। ১২১টির মতো উপজেলায় এই ধাপে ভোট হতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার ইসি সূত্রগুলো জানিয়েছে, ১ এপ্রিল, সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে ৩০তম কমিশন বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের তফসিল, দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র সভার আলোচ্যসূচিতে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, সোমবারের কমিশন বৈঠক থেকে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ এপ্রিল। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে। নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক। মোট চার ধাপে অনুষ্ঠেয় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরবর্তীতে তিন ধাপের ভোটগ্রহণ ২৩ ও ২৯ মে এবং ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।
প্রার্থীর মালিকানাধীন স্থানে ভোটকেন্দ্র নয়: আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রার্থীর মালিকানাধীন কোনো স্থানে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ না করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে:
(ক) কমিশন ভোট গ্রহণের তারিখের অন্যূন ১৫ (পনেরো) দিন পূর্বে উক্ত চূড়ান্ত তালিকা সরকারি গেজেটে প্রকাশ করবে এবং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে যে সকল এলাকার ভোটারগণ ভোটদান করবেন সে সকল এলাকার নামও চূড়ান্ত তালিকায় উল্লেখ করতে হবে; তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরও, বিশেষ পরিস্থিতিতে কমিশন যেকোনো ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করতে পারবে;
(খ) রিটার্নিং অফিসার প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট উপজেলার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটকেন্দ্রের ব্যবস্থা করবেন।
(গ) সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয় এরূপ স্থানকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা যাবে না।
(ঘ) পুরুষ ও মহিলা ভোটারগণ যাতে পৃথকভাবে ভোট প্রদান করতে পারেন তদুদ্দেশ্যে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট কক্ষের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং প্রতিটি ভোট কক্ষে ভোট চিহ্ন প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্থান রাখতে হবে।
(ঙ) কোনো প্রার্থীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো স্থানে কোনো ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না।
(চ) প্রার্থিতা চূড়ান্তকরণের পর কোনো প্রার্থীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো ভোটকেন্দ্র স্থাপিত হয়ে থাকলে কমিশন তা পরিবর্তন করতে পারবে।
(ছ) প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি ভোট কক্ষে ভোট চিহ্ন প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক গোপন কক্ষ থাকবে।
ছুটির দিনেও অফিস খোলা রাখার নির্দেশ: আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচন উপলক্ষে সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও অফিস খোলা রেখে কাজ করার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনে অফিস খোলা রেখে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রার্থীর অধীনস্তকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নয়: আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে প্রার্থীর অধীনে চাকরিরত বা অতীতে অধীনস্ত ছিলেন, এমন কাউকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদেরে পাঠিয়েছেন। নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, ভোটকেন্দ্রে দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার সাথে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠান নির্বাচন প্রক্রিয়ার সফল ও সার্থক প্রতিফলন ঘটে। ফলে ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। এ লক্ষ্যে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন কর্মকর্তাগণকে দায়িত্ব প্রদান করাই সমীচীন বলে নির্বাচন কমিশন মনে করে। নির্বাচন কমিশন আশা করে যে, যেহেতু দেশের উপজেলাসমূহ ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা সীমিত, সেহেতু সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রশাসনিক ক্ষমতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, নিরপেক্ষতার প্রতি লক্ষ্য রেখে এরূপ দায়িত্ববান কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার নিয়োগ করার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া যদি কোনো ব্যক্তি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অধীন বা পক্ষে চাকরিতে নিয়োজিত থাকেন বা কোনো সময় নিয়োজিত ছিলেন, তবে তাকে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার বা পোলিং অফিসার নিয়োগ করা যাবে না। এছাড়া অন্য কোনো কর্মকর্তা সম্পর্কে আপত্তি উত্থাপিত হলে তাও বিবেচনা করতে হবে।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ পাবেন যারা: আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে কাদের নিয়োগ করা যাবে, তা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল বৃহস্পতিবার কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন। নির্দেশনায় কোন প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মকর্তা কোন পদে নিয়োগ পেতে পারেন, তা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রিজাইডিং অফিসার:
(ক) সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত/ আধাস্বায়ত্তশাসিত অফিস ও প্রতিষ্ঠানের প্রথম শ্রেণির/প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা সম্পন্ন কর্মকর্তা, ক্ষেত্র বিশেষে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা।
(খ) সরকারি/ সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কলেজ/ সমমানের মাদ্রাসার শিক্ষক, ক্ষেত্র বিশেষে ডেমোনেস্ট্রেটর/ কর্মকর্তা।
(গ) রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, বিমা, কর্পোরেশন অথবা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা সম্পন্ন কর্মকর্তা, ক্ষেত্র বিশেষে দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা সম্পন্ন কর্মকর্তা।
(ঘ) সরকারি/ সরকারি অনুদান প্রাপ্ত উচ্চবিদ্যালয়/ সমমানের মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক/ সহকারী প্রধান শিক্ষক, ক্ষেত্র বিশেষে সিনিয়র শিক্ষক।
(ঙ) প্রয়োজনবোধে বেসরকারি ব্যাংক, বিমা অথবা নির্ভরযোগ্য যে কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উক্তরূপ কর্মকর্তা/ কলেজ শিক্ষক/ প্রধান শিক্ষক/ সহকারী প্রধান শিক্ষক।
সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার:
(ক) সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত/ আধাস্বায়ত্তশাসিত অফিস ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা।
(খ) রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, বিমা, কর্পোরেশন অথবা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় শ্রেণির/ দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা সম্পন্ন কর্মকর্তা।
(গ) সরকারি/ সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত উচ্চ বিদ্যালয়/মাধ্যমিক বিদ্যালয়/ সমমানের মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক/সহকারী প্রধান শিক্ষক/সিনিয়র শিক্ষক।
(ঘ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়/রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
পোলিং অফিসার:
(ক) সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত/ আধাস্বায়ত্তশাসিত অফিস ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারী।
(খ) সরকারি/সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কলেজ/সমমানের মাদ্রাসার কর্মকর্তা/কর্মচারী।
(গ) রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, বিমা, কর্পোরেশন অথবা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারী।
(ঘ) সরকারি/ সরকারি অনুদান প্রাপ্ত উচ্চ বিদ্যালয়/মাধ্যমিক বিদ্যালয়/ সমমানের মাদ্রাসার শিক্ষক/ কর্মকর্তা/কর্মচারী।
(ঙ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়/রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক/শিক্ষিকা।
(চ) প্রয়োজনবোধে বেসরকারি ব্যাংক, বিমা অথবা নির্ভরযোগ্য যে কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উক্তরূপ শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারী।
আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ এপ্রিল। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে। নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক। মোট চার ধাপে অনুষ্ঠেয় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরবর্তীতে তিন ধাপের ভোটগ্রহণ ২৩ ও ২৯ মে এবং ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।