ট্রান্সকম গ্রুপের সিমিনসহ তিনজনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
প্রবাহ রিপোর্ট : ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাযরেহ হক তার বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে হত্যার অভিযোগ এনেছেন সিমিন রহমানসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে। ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা লতিফুর রহমানের মেয়ে শাযরেহ হকের করা হত্যা মামলায় তার বোন, গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমানসহ তিনজনকে দেশে ফেরার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও কে এম জাহিদ সারওয়ারের বেঞ্চ গতকাল রোববার এ আদেশ দেয়। অপর দুজন হলেন ট্রান্সকম গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহনাজ রহমান এবং হেড অব ট্রান্সফরমেশন যারেফ আয়াত হোসেন। ট্রান্সকম গ্রুপের শীর্ষ তিন কর্তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন, মাহবুব আলী, শাহ মনজুরুল হক ও মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ। সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ বলেন, “সিমিনদের পক্ষে আইনজীবীরা একটি আবেদন নিয়ে এসেছিলেন। দেশে ফিরে এসে যাতে আত্মসমর্পণ করতে পারেন, সে আদেশ চাওয়া হয় আবেদনে। আদালত ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফিরে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন। কোম্পানির সম্পত্তি ও শেয়ার-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের মেয়ে শাযরেহ হক তার বড় বোন ও ট্রান্সকম গ্রুপের বর্তমান সিইও সিমিন রহমান এবং গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান ও তাদের মা শাহনাজ রহমানসহ ট্রান্সকমের আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছেন। এর মধ্যে একটি মামলায় শাযরেহ হক তার বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে হত্যার অভিযোগ এনেছেন সিমিন রহমানসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে। গত ২১ মার্চ রাতে গুলশান থানায় এ মামলা দায়ের করেন ট্রান্সকমের প্রতিষ্ঠাতা লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাযরেহ। ২০২৩ সালের ১৬ জুন ঢাকার গুলশানের বাসায় নিজের শোয়ার ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ২০২০ সালের ১ জুলাই লতিফুর রহমানের মৃত্যু হলে এক মাসের মাথায় ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসেন লতিফুর রহমানের স্ত্রী শাহনাজ রহমান, বড় মেয়ে সিমিন হোসেন পান সিইওর দায়িত্ব। সাড়ে তিন বছরের মাথায় ছোট মেয়ে শাযরেহ হক মামলার পথে হাঁটায় এ পরিবারের কর্তৃত্বের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। হত্যা মামলার আসামিরা হলেন- ট্রান্সকম গ্রুপের সিইও সিমিন রহমান (৫৭), সিমিনের ছেলে ও ট্রান্সকম গ্রুপের হেড অব ট্রান্সফরেশন যারাইফ আয়াত হোসেন (২৯), এসকেএফ ফার্মাসিটিউক্যাল লিমিটেডের ম্যানেজার (মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স) ডা. মুরাদ (৫০), এসকেএফ ফার্মাসিটিউক্যাল লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক (মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) ডা. মো. মুজাহিদুল ইসলাম (৫৫), ট্রান্সকম লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স-আইন) মো. ফখরুজ্জামান ভূঁইয়া (৬০), ট্রান্সকম লিমিটেডের ট্রান্সকম গ্রুপ করপোরেট ফাইন্যান্সের পরিচালক মো. কামরুল হাসান (৬১), মো. জাহিদ হোসেন (৫৫), ট্রান্সকম লিমিটেডের ম্যানেজার (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) সেলিনা সুলতানা (৪৫), ট্রান্সকম লিমিটেডের ম্যানেজার (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) কেএইচ মো. শাহাদত হোসেন (৫০), বাবুর্চি রফিক (৫৫) এবং ব্যক্তিগত চালক মিরাজুল (৪০)। এজাহারে ৭ নম্বর আসামি জাহিদ হোসেনের কোনো পরিচয় দেওয়া হয়নি। মামলায় শাহরেহ হক অভিযোগ করেন, “পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি অন্য ওয়ারিশ থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে কৌশলে বিষ প্রয়োগ/শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে সিমিন রহমানসহ অন্যদের আচরণে প্রকাশ পাচ্ছে।”