অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বাধ্যতামূলক অবসরে পুলিশ সুপার

প্রবাহ রিপোর্ট : বহিরাগতদের অস্ত্রাগারে অস্ত্র প্রদর্শন এবং তা ফেসবুক লাইভে সম্প্রচারের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গুরুদ- হিসেবে খুলনা রেঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ শাহেদ ফেরদৌস রানাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত ৯ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়। তবে, প্রজ্ঞাপনটি প্রকাশ করা হয় গত বুধবার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ২৯ আগস্ট রাজধানী ঢাকায় স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রোটেকশন ব্যাটালিয়নের (এসপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন শাহেদ ফেরদৌস রানা। ওই সময় তিনি কয়েকজন বহিরাগতকে এসপিবিএন-এর অস্ত্রাগার পরিদর্শনের সুযোগ দিয়ে বিভিন্ন অস্ত্রের বর্ণনা দেন এবং এসব কিছু ফেসবুক লাইভে সম্প্রচারের জন্য বহিরাগতদের সুযোগ দিয়েছিলেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করেন পুলিশ পরিদর্শক (সশস্ত্র) গোলাম মোস্তফা, পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) সৈয়দ আনিসুর রহমান, এসআই (নিরস্ত্র) নুর-এ-সরোয়ার রিপন, এসআই (সশস্ত্র) আবু সাঈদ মো. ওবাইদুর রহমান এবং এসআই (সশস্ত্র) মানিক খান। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, পরবর্তীকালে শাহেদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ অধিদফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পরে তার বিরুদ্ধে রুজু করা বিভাগীয় মামলায় উপস্থাপিত ভিডিওটি সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করানো হয়। একইসঙ্গে সিআইডিকে তাদের সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য বলা হয়। গত ২৪ আগস্ট সিআইডি মতামতসহ তাদের প্রতিবেদন পাঠায়। শাহেদ ফেরদৌসের এমন অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গুরুদ- হিসেবে তাকে ‘বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান’-এর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এ নিয়ে পরবর্তীকালে সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়। গত ১ জানুয়ারি সরকারি কর্ম কমিশন বাধ্যতামূলক অবসর প্রদানের দ- দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার পরামর্শ দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর প্রজ্ঞাপন জারি করে। শাহেদ ফেরদৌস রানা বিসিএস পুলিশের ২৫ তম ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ২০০৬ সালের ২১ আগস্ট পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। জানা যায়, ২০২০ সালের ২৯ আগস্ট রাজধানী এসপিবিএন-এর অস্ত্রাগার পরিদর্শন ও বিভিন্ন অস্ত্রের খুটিনাটি দেখেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ ও তার লোকজন। এ সময় কাউন্সিলয়ের লোকজন অস্ত্রাগার পরিদর্শনের কার্যক্রম ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রসার করেন। এর নিয়ে তৎকালীন সময়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ নানা মহলে ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছিল।