ঘরের ওপর টিলা ধস: স্বামী-স্ত্রী-সন্তানের লাশ উদ্ধার
প্রবাহ রিপোর্ট ঃ সিলেট নগরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেজরটিলার চামেলীবাগ আবাসিক এলাকায় টিলা ধসে চাপা পড়া তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। এর আগে ভোরে এ ঘটনা ঘটে। এ তিনজন হলেন- ওই এলাকার মরহুম রফিক উদ্দিনের ছেলে আগা করিম উদ্দিন (৩১), তার স্ত্রী শাম্মী আক্তার রুজি (২৫) ও ছেলে নাফজি তানিম (২)। সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান (র.) থানার ওসি (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় বাসার পাঁচজনকে অক্ষত ও দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। আহতদের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজে যায়। পরে তাদের সঙ্গে উদ্ধারকাজে যোগ দেয় সেনাবাহিনীর একটি টিম। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর মাটিচাপা অবস্থায় স্ত্রী-সন্তানসহ করিমের লাশ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা জানান, শনিবার থেকে সিলেটে ভারী বর্ষণ হচ্ছিল। এ অবস্থায় টিলার মাটি নরম হয়ে যায়। গতকাল সোমবার ভোরে মেজরটিলা চামেলীবাগের একটি টিলা ধসে পার্শ্ববর্তী বাড়ির ওপর পড়ে। এতে একই পরিবারের ১০ জন মাটি চাপা পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা পাঁচজনকে অক্ষত ও দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। স্বজনরা জানান, গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ভারী বর্ষণ চলাকালে বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে পাহাড় ধসে পড়ে বাড়িতে থাকা লোকজন আটকা পড়েন। তাদের মধ্যে সাতজনকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এর মধ্যে দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গতকাল সোমবার সকালে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে তাৎক্ষণিক দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এ সময় তিনি ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে সিসিক কর্মীদের উদ্ধারকাজে সহযোগিতার নির্দেশনা দেন। আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের তথ্য মতে, গত তিনদিন ধরে সিলেটে ভারী বর্ষণ হয়। শনিবার রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। গত রোববার ভোর ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এতে সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া নগরের উপকণ্ঠে টিলা ধসের শঙ্কা তৈরি হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক বার্তা কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।