শিশু ধর্ষণের দায়ে আসামির যাবজ্জীবন : দুই লাখ টাকা অর্থদ-
প্রবাহ রিপোর্ট : কুমিল্লায় স্কুলছাত্রীকে (১৩) ধর্ষণের দায়ে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে দুই লাখ টাকা অর্থদ-, অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়েছে। আর এ জরিমানার টাকা আসামি না দিলে তার সম্পত্তি বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আসামির উপস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় দেন। দ-প্রাপ্ত ব্যক্তি হলেন জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের আটগ্রাম এলাকার আলাউদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি প্রদীপ কুমার দত্ত জানান, ২০২০ সালের ১৮ জুলাই সকালে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার একটি শিশু ২০ টাকা নিয়ে আলাউদ্দিনের কসমেটিকসের দোকানে কাজল কিনতে যায়। ওই সময় তিনি শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার মাস ছয়েক পর শিশুটির দেহে পরিবর্তন দেখা দেয়, আর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক জানান যে শিশুটি ২৪ সপ্তাহ একদিনের অন্তঃসত্ত্বা। এ বিষয়ে শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে আলাউদ্দিনের কথা বলে। পরে শিশুর বাবা আলাউদ্দিনকে আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেন। থানার সেই সময়ের এসআই মো. কামাল উদ্দিন আসামি আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ তার নামে আদালতে চার্জশিট দেয়। শিশুটির একটি ছেলে সন্তান হয়েছে। সে এখন মায়ের সঙ্গে তার নানা বাড়িতে থাকে। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার এ রায় দেন বিচারক। বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন, ধর্ষণের শিকার শিশুর গর্ভের সন্তানকে তার মা কিংবা তার আত্মীয়স্বজনের তত্ত্বাবধানে রাখা যাবে। সন্তানটি তার বাবা বা মা কিংবা উভয়ের পরিচয়ে পরিচিত হতে পারবে। সন্তানের বয়স ২১ বছর হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষণের ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে। সন্তানের ভরণপোষণের অর্থ সরকার ধর্ষক আলাউদ্দিনের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে। এ ছাড়া আসামির বিরুদ্ধে আরোপিত অর্থদ-ের অর্থ ধর্ষণের শিকার শিশুর ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য করা হলো। অর্থ পরিশোধ না করলে আসামির সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে ভিকটিমকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়ার জন্য কুমিল্লা জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হলো।