জাতীয় সংবাদ

শুল্ক তুলে নিলে ইন্টারনেট ব্যবহার ২৮ শতাংশ বাড়বে: অ্যামটব

প্রবাহ রিপোর্ট : এবারের প্রস্তাবিত বাজেট টেলিযোগাযোগ খাতের জন্য ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ বলে মন্তব্য করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, করহার বাড়ানোয় বাড়তি যে খরচ হবে, তা সাধারণ গ্রাহকদের বইতে হবে। সেক্ষেত্রে তারা খরচ কমাবেন। ইন্টারনেটের ব্যবহারও কমবে। এতে টেলিযোগাযোগ খাতে প্রবৃদ্ধি ১২ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে যেতে পারে। গতকাল বুধবার রাজধানীর বনানীতে মোবাইল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (অ্যামটব) আয়োজিত বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান মোবাইল অপারেটর কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা। অ্যামটব নেতারা বলেন, মুদ্রাস্ফীতি ও ডলারের দাম বাড়ায় টেলিকম ব্যবসায় খরচ বেড়েছে। গত ছয়টি প্রান্তিকে অপারেটরগুলোর ক্রমেই আয় কমেছে। এমন সময়ে বাজেটে ভোক্তাপর্যায়ে করহার ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আবার বাজেট পাসের পর অর্থ বিলে করপোরেট কর ধরা হয়েছে ৪৫ শতাংশ। ধাপে ধাপে খরচ বাড়ছেই। তারা আরও বলেন, আমাদের আয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ কর পরিশোধ করতে হচ্ছে। সেবা দিতে গিয়ে অপারেটরদের ১০০ টাকার আয়ের ৫৮ টাকা যাচ্ছে সরকারি কোষাগারে। একজন গ্রাহক এখন ১০০ টাকার বিনিময়ে ৭২ টাকার সেবা পাচ্ছে। কিন্তু সরকারি খরচ মিলিয়ে ডাটার ক্ষেত্রে ৩৯ টাকা সরকারি কোষাগারে দিতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যৌক্তিক কর নির্ধারণের মাধ্যমে ভোক্তার ব্যবহার বাড়িয়ে রাজস্ব বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব। অ্যামটব মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বাজেট বিশ্লেষণ তুলে ধরেন রবি ও বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম এবং তাইমুর রহমান। রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, যখন কলরেট ও ইন্টারনেটের খরচ বাড়ে, গ্রাহকরা তখন ব্যবহার কমিয়ে দেন। এতে রাজস্ব কমে। দেশে এখন ১৮ কোটির বেশি সিম ব্যবহার হচ্ছে। তাদের মধ্যে ৮ কোটি গ্রাহক ইন্টারনেটের বাইরে। আমরা মনে করি, আবগারি শুল্ক তুলে নিলে গ্রাহকের খরচ কমবে। তখন ইন্টারনেট ব্যবহার ২৮ শতাংশ বাড়বে। বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, একজন গ্রাহককে এখন ১০০ টাকার সেবা পেতে ১৩৯ টাকা রিচার্জ করতে হচ্ছে। এতে গ্রাহক খরচ কমাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনদিনের প্যাকেজ উঠিয়ে নেওয়ায় এখন আয় কমছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ডাটা থেকে আমাদের আয় কমেছে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। তাই এবারের বাজেট আমাদের জন্য মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার হ্যান্স মার্টিন হেনরিক্সন বলেন, সিম কার্ডের ওপর অতিরিক্ত কর মোবাইল ফোনের ব্যবহার বিস্তারের ক্ষেত্রে সহায়ক না। এটি সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। এ ক্ষেত্রে যদি খরচ বাড়ানো না হয়, তবে সবার জন্যই ভালো হবে এবং টেলিকম খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়বে। বাজেট ঘোষণার পর থেকেই নতুন করহার কার্যকর করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন গণমাধ্যমকর্মীরা। জবাবে অ্যামটব মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকার বলেন, বাজেটের আগেই এসআরও জারি করা হয়। সেখানে তাৎক্ষণিক কার্যকরের আদেশ থাকায় সংসদে বাজেট প্রস্তাবের পর পরই এটি কার্যকর করতে হয়।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button