জাতীয় সংবাদ

২০ বছরে হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

প্রবাহ রিপোর্ট : সারা দেশে গত ২০ বছরে কারা ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। প্রতিবেদন আকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবকে এ তথ্য আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১০ জুন বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, ছয় মাসের মধ্যে ওই প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবকে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ‘চট্টগ্রাম কারাগারে হাজতির অস্বাভাবিক মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের’ শিরোনামে একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া একইদিন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনলাইন ভার্সনে ‘চট্টগ্রাম কারাগারে হাজতির মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের’ শীর্ষক শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯ এপ্রিল আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন ও আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের একটি কৃষক রুবেল দে’র মৃত্যুর ঘটনায় বিচারিক তদন্তের পদক্ষেপ এবং তার পরিবারকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আইনি নোটিশ পাঠান। তারপর গত মাসে আইন ও সালিস কেন্দ্রের পক্ষে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটে ওই দুটি প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়। রিটের শুনানি শেষে আদালত রুলও জারি করেন। রুলে হেফাজতে রুবেল দের মৃত্যুর অভিযোগ বিচারিক অনুসন্ধানে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বিচারিক অনুসন্ধান করতে ও তার পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, কারা মহাপরিদর্শক, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পুলিশের উপপরিদর্শক এস এম আবু মুসা, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার, জেলার ও ডেপুটি জেলারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ৩৮ বছর বয়সী এক হাজতির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই হাজতির নাম রুবেল দে। তিনি বোয়ালখালীর শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ জ্যৈষ্টপুরার বাসিন্দা সুনীল দে-এর ছেলে। তিনি কারাগারের ৩ নম্বর পদ্মা ওয়ার্ডে বন্দি ছিলেন। রুবেলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে তার স্বজন অভিযোগ তুলেছে, কারাগারে ভেতরে কারারক্ষী বা অন্য কয়েদিরা তাকে নির্যাতন করেছেন। মামলার নথি অনুসারে, বাড়ির পাশের এলাকা নন্দীপাড়া হরিমোহন এলাকায় চোলাই মদ বিক্রির সময় বোয়ালখালী থানা পুলিশের একটি দল গত ২৭ জানুয়ারি রাতে রুবেলকে আটক করে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button