জাতীয় সংবাদ

‘বেঁচে থাকলে অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করতো, তাই মেরে ফেললাম’

প্রবাহ রিপোর্ট ঃ ‘নিজে একাই মইরা যাইতাম। কিন্তু এরে (স্ত্রী) যদি বাঁচাইয়া রাইখা যাই, সে আরও অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবে। তাই মাইরা ফেললাম। অনেক স্বপ্ন ছিল রাসুলের সব সুন্নাহ আমার জীবনে বাস্তবায়ন করমু। কিন্তু পারলাম না।’ স্ত্রী মীম আক্তারকে (১৮) শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহের পাশে চিরকুট রেখে দরজায় তালা দিয়ে চলে যায় স্বামী আল আমিন (২৪)। গত বুধবার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা উত্তরপাড়া গ্রামের আবদুস সামাদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মীম আক্তার সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার মুলকান্দি (ছোট বেড়া খারুয়া) গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে। স্বামী আল আমিন টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার কালাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে আবদুস সামাদের বাসার তিনতলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে স্থানীয় সাদ টেক্সটাইল কারখানায় চাকরি করতেন। খবর পেয়ে বিকেলে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘরের তালা ভেঙে মীম আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে। মীম আক্তার এবং আল আমিন চাচাতো ভাই-বোন। গত ৯ মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল কুদ্দুছ স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, গত তিন মাস আগে আল আমিন তার স্ত্রী মীম আক্তারকে নিয়ে ওই বাড়ির তিনতলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। গত বুধবার দুপর ১২টা থেকে ২টার মধ্যে তিনি তার স্ত্রীকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে দরজা বাইরে থেকে তালা মেরে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর তিনি তার অফিসের সহকর্মী আরিফকে ফোনে জানান, তার স্ত্রী মীম আক্তারকে হত্যা করে মরদেহ ঘরে রেখে তালা দিয়ে চলে এসেছেন। দেয়ালে তার (স্ত্রীর) নানার মোবাইল নম্বর লেখা আছে। তাদের খবর দিয়ে যেন মরদেহ দিয়ে দেয়। তবে কী কারণে তিনি তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন তা কেউ জানাতে পারেনি। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। র‌্যাব, ডিবি এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, ঘাতক স্বামী আল আমিনকে গত বুধবার রাত ১২টায় জামালপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১ গাজীপুর পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের সদস্যরা।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button