জাতীয় সংবাদ

উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা

প্রবাহ রিপোর্ট : সিলেট অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু এলাকায় পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আভাস দিয়েছে পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। গতকাল শুক্রবার সকালে কেন্দ্রের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যার পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে। তবে এসময়ে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে। বুলেটিনে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ধীর গতিতে বাড়তে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানিও সমতল বাড়ছে, এ পরিস্থিতি আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ৪৮ ঘন্টায় পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীর পানি সমতল আগামী ২৪ ঘণ্টায় সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে। তাতে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল কিছু পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পাশাপাশ ঘাঘট নদী সংলগ্ন গাইবান্ধা জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যমুনাশ্বরী, করতোয়া, বাঙ্গালী, আপার করতোয়া, পুর্নভবা, টাঙ্গন, ইছামতি-যমুনা, আত্রাই, মহানন্দা এবং ছোট যমুনা নদীসর পানিও সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে বলে বুলেটিনে বলা হয়েছে। তবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল সার্বিকভাবে কমছে, এ অবস্থা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এবার জুনের শুরুতে প্রবল বর্ষণ আর উজানের ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। কয়েক দিন পর পরিস্থিতির উন্নতি হলেও গত ১৭ জুন কোরবানির ঈদের আগের দুদিন থেকে টানা বৃষ্টিতে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণাসহ আশেপাশের জেলার অনেক এলাকা ডুবে যায়। উজানের ঢলে জুলাইয়ের শুরুতে নতুন করে বন্যা দেখা দেয় ওই তিন জেলায়। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারি থেকে অতিভারি এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে চাঁদপুরে। এ ছাড়া নোয়াখালীর মাইজদীকোর্ট ও নীলফামারীর ডিমলায় ৪৫, ফরিদপুরে ৩৮, দিনাজপুরে ৩৬ মিলিমিটারসহ সারাদেশেই কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button