জাতীয় সংবাদ

তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই : আতঙ্কে নিম্নাঞ্চলের মানুষ

প্রবাহ রিপোর্ট : ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে ফের বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। ফলে লালমনিরহাটের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫ মিটার। যা বিপদ সীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা সকাল ৯টা থেকে অব্যাহত রয়েছে। বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র ও চরবাসীরা জানান, ভারতের সিকিমে উৎপত্তি স্থল থেকে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী। নদীর বাংলাদেশ অংশের উজানে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তা পানি নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি হওয়ায় ফারাক্কা গেট খুলে বাংলাদেশ অংশে ছেড়ে দেওয়া হয়। একইভাবে শুষ্ক মৌসুমে গেট বন্ধ করে তিস্তার পানি একক ব্যবহার করছে তারা। বর্ষাকাল শুরু হওয়ায় উজানে ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে অতিরিক্ত পানি বাংলাদেশ অংশে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এই উজানের ঢলে তিস্তার পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একইসঙ্গে যুক্ত হয়েছে কয়েক দিনের টানা ভারি বৃষ্টিপাত। ফলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমা ছুঁই ছুঁই করছে। বর্ষাকাল শুরু হলেই বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করেন ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ। চরাঞ্চলের কৃষক হামিজার রহমান বলেন, বৃষ্টির পানি সঙ্গে উজান থেকে হু হু করে আসছে পানি। বন্যা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কিছুকিছু এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। গবাদি পশুপাখি আর শিশু বয়োবৃদ্ধদের নিয়ে বর্ষাকালে কষ্ট হয়। ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ড তিস্তা নদীর তীরে। বন্যা হলেই এ ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। পানি বাড়ায় ইতোমধ্যে নিম্নাঞ্চলের কিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তিস্তা ব্যারাজ বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ গতকাল শনিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৮ সেন্টিমিটার নিচে, ৯টায় ছিল ১০ সেন্টিমিটার নিচে এবং দুপুর ১২টায়ও অপরিবর্তিত রয়েছে। টানা ৬ ঘণ্টা ধরে ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২০ মিলিমিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ-দৌলা বলেন, সকাল ৯টা থেকে তিস্তা নদীর এ পয়েন্টে বিপদ সীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, নদ নদীর পানির খবর সার্বক্ষণিক নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাধ্যমে নদী তীরবর্তী এলাকার খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button