কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে চিকিৎসকদের প্রতিবাদ

প্রবাহ রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন ও হয়রানির প্রতিবাদ এবং তাদের দাবির প্রতি সংহতি জানাতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করেছেন চিকিৎসকরা। গতকাল শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন তারা। এসময় রাজধানীর বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ ও ইউনিটের চিকিৎসক শিক্ষার্থীরা কর্মসূচিতে অংশ নেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, আমরা কেবল লোকমুখেই জানি যে, আমরা এ দেশের মালিক, কিন্তু এর প্রমাণ আমাদের কাছে নেই। কিন্তু বাস্তবে আমরা নাগরিক না, আমরা এ দেশের দাস। যেখানে জীবনের কোনো মূল্য নেই। এসময় চিকিৎসকরা শিক্ষার্থীদের ঢালাও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ করেন এবং অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের নিঃস্বার্থ মুক্তির দাবি করেন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর প্রতিবাদ করেন তারা। ‘আমার ভাই মরলো কেন? জবাব চাই জবাব চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’; ‘দালালি না রাজপথ?, রাজপথ রাজপথ’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’-সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। বক্তব্যে বিক্ষোভকারী চিকিৎসকরা ডা. সজীবকে হত্যা, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের আক্রমণ ও গুলি চালানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি সব শ্রেণিপেশার মানুষের অধিকার আদায়, নিহতদের বিচারের দাবি ও অবৈধভাবে গ্রেপ্তারকৃতদের জামিনের দাবি করেন চিকিৎসকরা। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে একজন চিকিৎসক বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এভাবে গ্রেপ্তার ও নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যার নজির কোনো স্বাধীন দেশে নেই। রাস্তায় বিনা কারণে মোবাইল ফোন চেক করার অধিকার প্রশাসনের নেই। অথচ পুলিশ প্রশাসন তা প্রতিনিয়ত করছে। ওই চিকিৎসকরা আরও বলেন, আমরা চাই একটা সুন্দর স্বাধীন দেশ। এই দেশটা স্বাধীন মনে হচ্ছে না, যেখানে লাশ পড়ে থাকে রাস্তায়, নির্বিচারে গুলি করা হচ্ছে। এতে আমার ভাই মারা যাচ্ছে, আমার বোন মারা যাচ্ছে, ছেলেমেয়েরা মারা যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো সবসময় চেয়েছে দেশের তরুণ প্রজন্ম যেন সংবিধান না শিখে বড় হয়- উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাজাকার শব্দটি উচ্চারণের পাশাপাশি বলেছেন, যে সব শিক্ষার্থী আন্দোলন করছে তারা নাকি সংবিধান সম্পর্কে অবগত নয়। ছোট স্কুলব্যাগে ১৪-১৫টি বই থাকে, কিন্তু সংবিধানের একটি লাইনও লেখা নাই। রাজনৈতিক দলগুলো সবসময়ে চেয়েছে দেশের তরুণ প্রজন্ম যেন সংবিধান না শিখে বড় হয়। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ-সংঘাত, সহিংসতা, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় কয়েক হাজার মানুষ।