জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তার সম্পদের তথ্য চেয়ে ১১ দেশে চিঠি

প্রবাহ রিপোর্ট : বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান কর্মকর্তা মাসুদ বিশ্বাসের সম্পদের তথ্য চেয়ে আমেরিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ ১১টি দেশে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে তিনি যাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) প্রধানকে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে দেওয়া দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের সই করা চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান কর্মকর্তা মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ ও বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ চার সদস্যের একটি টিম অনুসন্ধান করছে। এ অবস্থায় গোপন সূত্রে জানা যায়, মাসুদ বিশ্বাস গোপনে দেশত্যাগ করে অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এমতাবস্থায় মাসুদ বিশ্বাস যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ করা হল। বিষয়টি ‘অতীব জরুরি’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই কর্মকর্তার নানা দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অভিযোগ রয়েছে, মাসুদ বিশ্বাস বিএফআইইউর প্রধান কর্মকর্তা পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। ঘুষের বিনিময়ে স্কাই ক্যাপিটাল এয়ারলাইন্স লিমিটেডের বিমান ক্রয়ে সন্দেহজনক অনিয়মের অভিযোগ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে না পাঠাননি। এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল পারভেজ ব্যাংক থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। তার সেই আর্থিক অনিয়মের রিপোর্টকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ এর আওতায় গোয়েন্দা প্রতিবেদন না পাঠিয়ে মাসুদ বিশ্বাস সাধারণ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন হিসেবে সংশ্লিষ্টদের পাঠানোর অনুমতি দেন। আরও অভিযোগ রয়েছে, অনিয়ম ও অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে শেয়ার বাজারের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিমিদ্রী লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়। ওই স্থতিগাদেশকে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন মাসুদ বিশ্বাস। তানাকা গ্রুপ, এস এ গ্রুপ এবং আনোয়ার গ্রুপের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং, অর্থপাচার সংক্রান্ত সুনিশ্চিত তথ্য থাকা সত্ত্বেও ওসব কেস আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে না পাঠিয়ে ব্যক্তিগত সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে নথিভুক্ত করেন তিনি। এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মাসুদের সঙ্গে যোগসাজশে ইসলামি ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন মাসুদ বিশ্বাস। আবদুল কাদির মোল্লার থার্মেক্স গ্রুপ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে বিদেশে অর্থ পাচারসহ ঘুষের বিনিময়ে জিনাত এন্টারপ্রাইজের বিদেশে অর্থ পাচারের কেস ধামাচাপা দিয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি। অবৈধভাবে অর্জিত তার জ্ঞাত-আয় বর্হিভূত বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে সঠিক প্রমাণিত হয়েছে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button