জাতীয় সংবাদ

শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে ২ মামলা

প্রবাহ রিপোর্ট : কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে লক্ষ্মীপুর ও যাত্রীবাড়ীতে ‘গণহত্যা চালানো হয়েছে’ উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের পরিবার দুটিকে মামলা দায়ের প্রক্রিয়ায় আইনি সহায়তা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর এ অভিযোগ দাখিল করা হয়। কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গণঅভ্যুত্থানের এক দফা তথা ‘ফ্যাসিবাদি ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৫৫ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশ করেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি’র প্রাথমিক কাজ হিসেবে ঘোষিত ৮ দফা কর্মসূচির ২য় দফা তথা ‘ছাত্র-জনতার উপর সংঘঠিত নির্মম হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা’ বাস্তবায়নে জাতীয় নাগরিক কমিটি ছাত্র-নাগরিকের অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারকে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেওয়া শুরু করেছে। ছাত্র-নাগরিকের অভ্যুত্থানে হত্যাকা-ের শিকার হওয়া দুই শহীদের পরিবার জাতীয় নাগরিক কমিটি’র মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন। আমরা শহীদ পরিবার দুটিকে মামলা দায়ের প্রক্রিয়ায় আইনি সহায়তা প্রদান করেছি। জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে আরও বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে গত ১৮ জুলাই কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলাবস্থায় যাত্রাবাড়ি থানাধীন কুতুবখালী কাজলা পেট্রোল পাম্পের পাশের পকেটগেটে ফ্যাসিবাদের দোসরদের গুলিতে হত্যাকা-ের শিকার দনিয়া কলেজের বিএ (পাস) কোর্সের ছাত্র শহীদ সাকিব হাসান। আর গত ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর তেমুহনি এলাকায় গুলিতে হত্যাকা-ের শিকার হন চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র শহীদ ওসমান পাটওয়ারী ওরফে ওসমান গণি। এই দুই হত্যাকা-ের বিচার চেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় নাগরিক কমিটি’র তত্ত্বাবধানে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৩(২) (এ), ৩(২) (গ), ৩(২) (এইচ), ৪(১) এবং ৪(২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। শহীদ সাকিব হাসানের বাবা মো. মর্তুজা আলম এবং শহীদ ওসমান গণির বাবা মো. আবদুর রহমান বাদি হয়ে পৃথক অভিযোগ দুটি দায়ের করেছেন বলেও জানায় জাতীয় নাগরিক কমিটি। যেসব শহিদের পরিবার এখনও আইনি লড়াইয়ে যুক্ত হয়নি কিংবা বিভিন্ন কারণে মামলা দায়ের করতে পারেনি, তাদের ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করতে আহ্বান জানায় জাতীয় নাগরিক কমিটি। এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা মামলার তদন্তের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবো এবং বিচার শুরু হওয়ার পর আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে শহিদ পরিবারকে আইনি প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো। এছাড়াও এই অভ্যুত্থানে আহতদের পক্ষে মামলা দায়ের, পরিচালনা ও বিচার প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকার মাধ্যমে সার্বিক সহযোগিতা দেবে জাতীয় নাগরিক কমিটি। কেবল জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত শহিদ ও আহত যোদ্ধাদেরই নয়; বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদি আমলে নানা সময় যারা হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন এবং স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেসব শিক্ষার্থী অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদেরও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি ‘প্রো-বোনো সার্ভিস’ তথা বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেবে বলেও জানানো হয়েছে। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রাথমিক সার্বিক আইনি সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। এসময় কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সাকিল আহমাদ, ফাতিমা আক্তার (তাহসিন), প্রিয়াসী চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button