জাতীয় সংবাদ

মেট্রোরেল মেরামতে সরকারের সাশ্রয় ১১৮.২৪ কোটি টাকা

প্রবাহ রিপোর্ট : অর্ন্তর্বর্তী সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ দুটি ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো স্টেশনের সরঞ্জাম মেরামত ও প্রতিস্থাপনে প্রায় ১১৮.২৪ কোটি টাকা সাশ্রয় এবং সম্ভব্য তারিখের আগেই ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু করতে সক্ষম হয়েছে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রউফ গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, আমরা মেরামতের জন্য আগে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন হবে বলে অনুমান করা হয়েছিল, তার তুলনায় বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করে সফলভাবে দুটি স্টেশন চালু করেছি। তিনি জানান, মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন দুইটি মেরামত ও যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপনে মাত্র ১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আবদুর রউফ বলেন, ডিএমটিসিএলের প্রকৌশল ও প্রযুক্তিগত দল ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনগুলো যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন ও মেরামতের কাজ করেছে। এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতু বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছিলেন, ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানির তহবিল থেকে এ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। তিনি বলেন, মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন দুই মাস ১৭ দিন পর ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা দিয়ে আবার চালু করা হয়েছে, আর কাজীপাড়া মেরামতে ব্যয় হয়েছে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কিছু অব্যবহৃত যন্ত্রপাতি অন্য স্টেশন থেকে এনেও মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে বসানো হয়েছে। মেট্রোরেল সূত্রে জানায়, ডিএমটিসিএল মেট্রোরেল লাইন-৬-এর অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব মো. জাকারিয়ার নেতৃত্বে ২২ জুলাই ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন এবং মেট্রোরেল স্টেশন দুটি আবার কবে চালু করা যায় তা নির্ধারণ করতে আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে স্টেশন দুটি পুনরায় চালু করতে আনুমানিক ব্যয় এবং সময়সহ ১০ কার্যদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। তদন্ত কমিটি জানায়, দুটি স্টেশনে টিকিট ভেন্ডিং সিস্টেম, ই-সিস্টেম, পাঞ্চ মেশিন, বিভিন্ন ডিভাইস ও কম্পিউটার সম্পর্কিত নতুন যন্ত্রপাতি আমদানি এবং প্রতিস্থাপন করে ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন দুটি পুনরায় চালু করতে এক বছরের বেশি সময় লাগতে পারে। ঘটনাস্থলে স্টেশন দুটি মেরামতের আনুমানিক ব্যয় ৩০০ কোটি টাকা উল্লেখ করা হলেও পরবর্তীতে মেরামত ব্যয় আরো খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করা হয়। স্টেশন দুটি মেরামত ও প্রতিস্থাপনের জন্য ১৩৭ কোটি ১০ লাখ টাকা উল্লেখ করে কমিটি ১৪ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। যার মধ্যে সরকারের কাছ থেকে ৪৬.৫৯ কোটি টাকা এবং প্রকল্পে ব্যয় ৯১.৫১ কোটি টাকা ধরা হয়। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, স্টেশন দুটি চালু করতে প্রায় ২৭০ দিন লাগবে। কিন্তু বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় কাজীপাড়া স্টেশনটি ২০ সেপ্টেম্বর এবং মিরপুর-১০ স্টেশনটি ১৫ অক্টোবর পুনরায় চালু করা হয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে দেশের প্রথম মেট্রোরেল লাইন ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট লাইন-৬, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত আংশিকভাবে চালু করা হয়। ২০২৩ সালের নভেম্বরে মতিঝিল পর্যন্ত রুটটি বাড়ানো হয়। বর্তমানে এটি উত্তরা-মতিঝিল রুটে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২.৭০ লাখ যাত্রী বহন করে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) তার প্রযুক্তিগত ও যান্ত্রিক প্রযুক্তিতে রাজধানীতে প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল নির্মাণ করেছে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button