জাতীয় সংবাদ

জ¦ালানি ও বিদ্যুৎ খাতকে লুটেরামুক্ত করে জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির দাবি

প্রবাহ রিপোর্ট : জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি ও দুর্নীতির জন্য দায়ী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব, উপদেষ্টাসহ জ¦ালানি অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে জ¦ালানি ও বিদ্যুৎ খাতকে লুটেরামুক্ত করে জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সুলভ, স্বনির্ভর ও প্রাণপ্রকৃতিবান্ধব মহাপরিকল্পনা নিতে হবে। শনিবার সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘জ¦ালানি ও বিদ্যুৎ খাতের রূপরেখা: বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব দাবি করে তেল গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। কমিটির শীর্ষ নেতা অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, এই জাতীয় কমিটি কাজ শুরু করেছিল গ্যাস রপ্তানির বিরোধিতা করে। বাংলাদেশের জন্য পারমাণবিক বিদ্যুতের দরকার নাই। রামপাল, রূপপুর বাতিল করতে হবে। এটা বন্ধ না হলে বাংলাদেশের জন্য চরম ক্ষতি হবে। এই সরকারের কয়েকজন সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। রামপাল কয়লা বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। আশা করি, তারা এই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নেবেন। আনু মোহাম্মদ আরও বলেন, কাঠ কয়লা এবং খনিজ কয়লার মধ্যে পার্থক্য আছে। যা বিগত সরকারপ্রধান জানতেন না। কারণ তিনি রামপাল কয়লার বিষয়ে একবার বলেছিলেন, তিনি ছোটবেলায় কয়লা দিয়ে দাঁত মেজেছিলেন। তাই কয়লা কোনো ক্ষতি করবে না। কিন্তু আসল বিষয় হলো দাঁত মাজার সেই কাঠ কয়লা এবং খনিজ কয়লার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, জনগণ যেন সঠিক দাম, মাপ ও মানে নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ, প্রাথমিক জ¦ালানি ও নবায়নযোগ্য জ¦ালানি সেবা পায় সে জন্য বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ¦ালানি সরবরাহের সব পর্যায়ে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা, সমতা, যৌক্তিকতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় তেল গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো- জাতীয় স্বার্থ রক্ষার্থে বিদ্যুৎ ও জ¦ালানির মূল্য কমাতে স্বল্প মেয়াদে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; বিগত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি চুক্তি ও সম্ভাব্য চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে; স্বৈরাচারী সরকারের সংগঠিত সব জ¦ালানি অপরাধের বিচার করতে হবে; বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও বিদ্যুৎ খাত পরিকল্পনার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি করতে হবে; দেশীয় গ্যাস উত্তোলন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, আমদানি করা গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে এবং সাগরে গ্যাস উত্তোলনে বাপেক্সের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করে প্রতিযোগিতামূলক বিডিং নিশ্চিত করতে হবে। মতবিনিময় সভায় আরও ছিলেন- অধ্যাপক এমএম আকাশ, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, অধ্যাপক ড. আনিস চৌধুরীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা। কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ¦ালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, জ¦ালানি অপরাধী ও দুর্নীতিবাজ ব্যাক্তি এক নয়। দুর্নীতিবাজ ব্যাক্তি জ¦ালানি অপরাধী হতে পারে। কিন্তু জ¦ালানি অপরাধী দুর্নীতিবাজ নাও হতে পারে। দুর্নীতি চিহ্নিত করতে হবে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের আইনের আওতায়। জ¦ালানি অপরাধীদের বিরুদ্ধে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে মামলা দায়ের করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এন আকাশ তার বক্তব্যে বলেন, প্রত্যেকটা চুক্তির শর্ত এবং বিস্তারিত প্রকাশ করতে হবে। জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে দুইটা প্রধান শর্ত আমরা আগেই দিয়েছি, জাতীয় সম্পদের মালিকানা বিদেশিদের দেয়া যাবে না, সেটা গ্যাসক্ষেত্র হোক কিংবা জমির কোনো মালিকানা হোক। যেখানে আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা আছে, সেইখানে আমরা বিদেশিদের ডাকবো না। যেকোনো চুক্তি বা কাজে যথাযথভাবে টেন্ডারিং করতে হবে। গোলটেবিল বৈঠক থেকে বক্তারা আরও বলেন, জ¦ালানি ও বিদ্যুৎ খাতকে লুটেরামুক্ত করে জাতীয় সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সুলভ, স্বনির্ভর ও প্রাণপ্রকৃতিবান্ধব মহাপরিকল্পনা নিতে হবে। জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি ও দুর্নীতির জন্য দায়ী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব, উপদেষ্টাসহ জ¦ালানি অপরাধীদের বিচার চাই। জনগণ যেন সঠিক দাম, মাপ ও মানে নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ, প্রাথমিক জ¦ালানি ও নবায়নযোগ্য জ¦ালানি সেবা এবং দুর্নীতি-লুণ্ঠনের শিকার না হয়, সেজন্য বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ¦ালানি সরবরাহের সকল পর্যায়ে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা, সমতা, যৌক্তিকতা ও জবাবদিহিতা তথা জ¦ালানি সুবিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বৈঠক থেকে ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে:
০১। জাতীয় স্বার্থ রক্ষার্থে বিদ্যুৎ ও জ¦ালানির মূল্য কমাতে স্বল্প মেয়াদে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
০২। বিগত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি চুক্তি ও সম্ভাব্য চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে এবং প্রয়োজনে বাতিল করতে হবে।
০৩। স্বৈরাচারী সরকারের সংগঠিত সকল জ¦ালানি অপরাধের বিচার করতে হবে।
০৪। বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতের প্রতিষ্ঠানিক সংস্কার ও বিদ্যুৎখাত পরিকল্পনার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি করতে হবে।
৫। দেশীয় গ্যাস উত্তোলন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, আমদানিকৃত গ্যাসের উপর নির্ভরতা কমাতে হবে, এবং সাগরে গ্যাস উত্তোলনে বাপেক্সের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
৬। নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মান করে প্রতিযোগিতামূলক বিডিং নিশ্চিত করতে হবে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button