জাতীয় সংবাদ

রোকোয়া বিশ^বিদ্যালয়ের ২ দুই শিক্ষক ও ৭২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

প্রবাহ রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় দুই শিক্ষকসহ সাত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তারাসহ ৭২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকালে বেরোবির সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকত আলী জানিয়েছেন। এর আগে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা কক্ষে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকত আলী সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তিনি জানান, সিন্ডিকেট সভায় ১০ জন সদস্যের মধ্যে আট জন উপস্থিত ছিলেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে এবং এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী দুই শিক্ষক মশিউর রহমান ও আসাদ মন্ডল এবং সাত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বহিষ্কারের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২ শিক্ষার্থী জড়িত থাকার অভিযোগে তাদেরকেও বহিষ্কার এবং সবার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ছাত্র রাজনীতি। উপাচার্য জানান, এখন থেকে কোনো শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী দলীয় রাজনীতি করতে পারবে না। সেইসঙ্গে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীসহ শতাধিক ৫ আগস্টের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন- তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, সভায় তিন শিক্ষক- বাংলা বিভাগের ড. তুহিন ওয়াদুদ, ইতিহাস ও প্রতœতত্ত্ব বিভাগের ইউসুফ ও গণিত বিভাগের আইরিন আখতারের চাকরির বিধি লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী কোনো দলের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হতে পারবেন না। এটা কেন এতদিন হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখা হবে। সেই সঙ্গে এখনও যারা বিভিন্ন দলের সঙ্গে জড়িত আছেন- তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপাচার্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন। এ বিষয়ে শিক্ষার্থী মুশফিক বলেন, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির নামে ছাত্রলীগ যেসব অপকর্ম করেছে- তারা মেধাবী শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে হত্যা করার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল। বার বার বলে আসছিলাম, আবু সাঈদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি আর দলীয় লেজুড়বৃত্তি বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট দলীয় ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা দেওয়ায় আমরা সিন্ডিকেট ও উপাচার্য মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই। একই কথা বলেন শিক্ষার্থী সাইদুল আরমান, সাবিহা মাহবুব। তারা বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় লেজুড়বৃত্তির ছাত্র রাজনীতি ভয়াবহ চিত্র আমরা দেখেছি। আমরা দাবি করেছিলাম, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে সিদ্ধান্ত হয়েছে- এতে আমরা দারুণ খুশি। তবে ছাত্রদের সমস্যা নিয়ে ছাত্র সংসদ থাকা দরকার।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button