ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দলের স্থান নেই: ফিনান্সিয়াল টাইমসকে ড. ইউনূস
প্রবাহ রিপোর্ট : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দলের কোনো স্থান নেই। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে দেশের প্রাচীনতম ও অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। তাছাড়া ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক উত্তেজনাকে এড়াতে এই মুহূর্তে তার সরকার শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইবে না বলেও জানান তিনি। সাক্ষাতকারে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে স্বল্প মেয়াদে নিশ্চিতভাবেই তার (হাসিনার) কোনো জায়গা নেই- আওয়ামী লীগেরও কোনো জায়গা নেই। তিনি বলেন, তারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা তাদের প্রভাব বাড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনো ফ্যাসিবাদী দলের অস্তিত্ব থাকা উচিত নয়। সাক্ষাতকারে প্রধান উপদেষ্টা আশঙ্কা প্রকাশ করেন বলেন আওয়ামী লীগ হয়ত ভেঙে যেতে পারে। কিন্তু তিনি জোর দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের ভাগ্য তার অন্তর্বর্তী প্রশাসন নির্ধারণ করবে না। কারণ এটি রাজনৈতিক সরকার নয়। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ভবিষ্যত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না সে বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ‘ঐক্যমত্যে’ নির্ধারিত হবে। তবে সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ফিনান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, তার দল যে কোনো সময় নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত। নির্বাচনের সময়সীমা বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা সংবাদ মাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো সময়সীমা এখনই নির্ধারণ করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, আমাদের কাজ হল কত গুলো বিষয়ের মীমাংসা করা এবং সংস্কারের কাজ শেষ করা। নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। ভারতের কাছে হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। আমি মনে করি না রায় হওয়ার আগে তাকে ফেরত চাওয়া হবে। যখন রায় আসবে, আমরা ভারতের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ফিনান্সিয়াল টাইমসের কাছে দাবি করেন তার মা যে কোনো মামলা লড়তে প্রস্তুত কারণ তার বিরুদ্ধে গত আগস্টে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার যে সকল অভিযোগ আনা হচ্ছে তার সবই বানোয়াট। ইউনূসের সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হিন্দুদের ওপর সেসকল হামলা হয়েছে তা ধর্মীয় কারণে নয় বরং তাদের আওয়ামী রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে। নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রতিবেশী, আমাদের একে অপরকে প্রয়োজন, আমাদের মধ্যে অবশ্যই সেরা সম্পর্কটি থাকতে হবে যা যেকোনো প্রতিবেশীর মধ্যে থাকা উচিত।