জাতীয় সংবাদ

সীমান্তে শিথিলতা দেখানো যাবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রবাহ রিপোর্ট : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তে কোনো শিথিলতা প্রদর্শন করা যাবে না। সেখানে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নজরদারি বজায় রাখতে হবে। জাতীয় স্বার্থ বজায় রেখে চোরাচালান প্রতিরোধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিজিবিকে তাদের আইন ও ম্যান্ডেট অনুযায়ী কাজ করতে হবে। তাদের পারফরম্যান্স আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। সেজন্য সাধারণ জনগণ বিজিবির কর্মকা-ে খুশি। উপদেষ্টা বলেন, একটি সুশৃঙ্খল ও প্রশিক্ষিত বাহিনীর সদস্য হিসেবে বিজিবি সদস্যদের চেইন অব কমান্ড মেনে কাজ করতে হবে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বেআইনি আদেশ মানা যাবে না। আদেশের ক্ষেত্রে তা বৈধ ও আইনসঙ্গত কিনা তা বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। উপদেষ্টা এসসময় বিজিবি সদস্যদের নবোদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানান। পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা বলেন, বিডিআর হত্যাকা-ের তদন্তে কমিশন গঠন করা হবে কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে পুনঃ তদন্ত অবশ্যই হবে এবং তা দ্রুত হবে। তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকা-ের পুনঃতদন্ত অবশ্যই হতে হবে। দ্রুতই তদন্ত টিম করা হবে। যেহেতু অন্যান্য অনেকগুলোর হচ্ছে, এটাও হয়ে যাবে। কি হবে বলতে পারব না। যে কোনো একটা হইতেই হবে। এদিন বিজিবিকে একগুচ্ছ নির্দেশনা দেওয়া কথা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, বিজিবির যেহেতু বর্ডারভিত্তিক কাজ করতে হয়, জনগণের সঙ্গে একটা সুসম্পর্ক রাখতে হবে, একটা সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখলেই কাজ করতে সুবিধা হয়। তারাই কিন্তু বিভিন্ন ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করে। সীমান্ত দিয়ে ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ‘অবৈধ পণ্য’ প্রবেশ ঠেকাতে জোর দিয়ে তিনি বলেন, আপনারা জানেন সীমান্ত দিয়ে অনেক সময় ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদক চলে আসে। কোনো অবস্থায় যেন না আসে। এগুলো জাতির অনেক ক্ষতি করছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুপ্রবেশ নিষেধ। কিন্তু মানবিক একটা দিক রয়েছে। ওই বেল্টে আপনারা জানেন সারাদিনই গোলাগুলি হচ্ছে। এদের কিন্তু আবার পাঠিয়ে দেওয়া হয়, খুব একটা বেশি রোহিঙ্গা কিন্তু ঢুকতে পারে না। আমাদের এখানে ১২ লাখ রোহিঙ্গা আছে, এখন ১৩ লাখের মতো হয়ে গেছে। কিছু ঢুকছে আমিও অস্বীকার করি না। তাদের আবার পাঠায় দেব। অপরাধীদেরকে কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আগে অনেক সময় অনেক প্রতাপশালী অপরাধী ছাড় পেয়ে যেত। সেটা আর হতে দেওয়া যাবে না, অপরাধী যতই প্রতাপশালীই হোক না কেন। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, তবে খুব সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছাতে আরও সময় লাগবে। মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ঢাকার প্রায় সব পুলিশকে চেঞ্জ করা হয়েছে। তাদের কিন্তু অলিগলি চিনতেও সময় লাগবে। তাদের ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্ক করতে সময় লাগবে। এর আগে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সকালে রাজধানী ঢাকার পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে আসেন। সকাল ৯টায় পিলখানা সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অন্যান্য পদবির কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা এবং সব পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button