জাতীয় সংবাদ

দেশে শরিয়াহভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ইস্যুর দাবিতে আইনি নোটিশ

প্রবাহ রিপোর্ট : বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য ইসলামীক শরিয়াহভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বন্ড ইস্যুর দাবিতে সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশের ব্যাংকের গভর্নর ও জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান। নোটিশে বলা হয়েছে, সরকারের পক্ষে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র ও বন্ড ইস্যু করে থাকে। সুনাগরিক হিসেবে দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশের নাগরিকদের উচিত সরকারের ইস্যু করা বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র ও বন্ডে বিনিয়োগ করা। কিন্তু জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অসাংবিধানিক কর্মকা- ও বৈষম্যের কারণে দেশের আপামর মুসলিম জনগোষ্ঠী এসব সঞ্চয়পত্র ও বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারছে না। নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানত দুই ধরনের আর্থিক ব্যবস্থা বিদ্যমান। যেমন-সুদভিত্তিক কনভেনশনাল আর্থিক ব্যবস্থা এবং ইসলামীক শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক ব্যবস্থা। বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এবং বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪১ অনুযায়ী বাংলাদেশের জনগণের ধর্মচর্চা ও ধর্ম প্রচারের অধিকার রয়েছে। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, ইসলামীক শরিয়াহভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা হলো ইসলাম ধর্ম চর্চার অন্যতম প্রধান অংশ। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবা বিদ্যমান রয়েছে। বাংলাদেশের সরকারের পক্ষে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র ও বন্ড ইস্যু করে থাকে। ওই সঞ্চয়পত্র ও বন্ড থেকে বিনিয়োগকারীরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সুদ পেয়ে থাকে। অপরদিকে ইসলাম ধর্মের মূলনীতি অনুযায়ী, সুদ খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ক্ষেত্রে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য কোনো শরিয়াহভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বন্ডের ব্যবস্থা করেনি। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বৈষম্য করেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরকে অবিলম্বে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য ইসলামীক শরিয়াহভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বন্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী তাদের অর্থ ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন এবং দেশের সুনাগরিক হিসেবে অবদান রাখতে পারেন। মূলত জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হয়ে ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। আইনি নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে ইসলামীক শরিয়াহভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বন্ড ইস্যু জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ও অন্যান্য বিবাদীদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। না হলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button