জাতীয় সংবাদ

প্রেমিককে নিয়ে কলেজছাত্রকে হত্যা, কথিত প্রেমিকাসহ গ্রেপ্তার ৩

প্রবাহ রিপোর্ট ঃ এক সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ কলেজছাত্র সুমনের সন্ধান মিললো অবশেষে। মাটিচাপা দেওয়া সুমনের লাশ পাওয়া গেলো শেরপুর শহরের সজবরখিলা এলাকার একটি বাসার উঠানে। গত সোমবার মধ্যরাতে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়। বেরিয়ে আসে ত্রিভুজ প্রেমের চাঞ্চল্যকর কাহিনি। এ ঘটনায় নিহত কলেজছাত্রের কথিত প্রেমিকা, তার বাবা ও প্রেমিক রবিনসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে, গত সোমবার সুমনের বাবা নজরুল ইসলামের দায়ের করা মামলায় কথিত প্রেমিকা ও তার বাবাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে প্রেমিক রবিনের তথ্য বেরিয়ে আসে। পরে অভিযান চালিয়ে ময়মনসিংহ থেকে রবিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের তথ্যমতে, শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সুমন মিয়া। একই কলেজের সহপাঠী এক তরুণীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের দুজনের একাধিক ছবি পাওয়া গেছে। তবে সুমন ছাড়াও একই সময়ে ময়মনসিংহ নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী রবিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান ওই তরুণী। একপর্যায়ে সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রবিন ও অভিযুক্ত তরুণী। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা স্বীকার করেছেন রবিন। এদিকে, গেলো ৪ নভেম্বর বিয়ের কথা বলে সুমনকে ডেকে আনার পর প্রথমে শহরে বিয়ের কেনাকাটা সম্পন্ন করেন ওই তরুণী। এরপর বিকালে শহরের সজবরখিলা এলাকায় রবিনের বাসায় এনে সুমনকে হত্যার পর উঠানে মাটিচাপা দেওয়া হয়। সুমনের খালা কল্পনা বলেন, সুমনকে আমি আমার ছেলের মতো করে বড় করেছি। ওর কোনও আবদার আমি ফালাই নাই। আমরা অনেক বোঝাইছি, এই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার জন্য। আজকে এই ডাইনিটা আমার সুমনরে হত্যা করলো। আমি এর বিচার চাই। পরিবারের তথ্যমতে, এসএসসি পরীক্ষায় একই কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার সময় সুমনের সঙ্গে ওই তরুণীর পরিচয় হয়। পরে তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ালে দুজনই একই কলেজে ভর্তি হয় পুলিশ জানায়, তদন্তের পাশাপাশি অভিযান চালিয়ে প্রথমে ওই তরুণী ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করলেও সুমনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে গত সোমবার রাতে ময়মনসিংহ থেকে রবিনকে গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে সুমনকে মেরে শহরের সজবরখিলা এলাকায় তার বাড়ির উঠানে লাশ মাটিচাপা দিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে। পরে পুলিশ তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে তার দেখানো জায়গায় মাটি খুঁড়ে সুমনের লাশ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে শেরপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, পুরো ঘটনাটি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করেছে। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে সুমনের সর্বশেষ অবস্থান ময়মনসিংহে পাওয়া গিয়েছিল। তারই সূত্র ধরে ময়মনসিংহ থেকে রবিনকে গ্রেপ্তারের পর তার দেখানোমতে মাটিচাপা অবস্থায় সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রেমঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে এ হত্যাকা-টি ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে মূল তিন জন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। হত্যাকা-ে আরও কেউ জড়িত থাকার বিষয় তদন্তে উঠে এলে তাদেরও দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button