হবিগঞ্জে আন্দোলনে নিহত ৯ জনের লাশ কবর থেকে উত্তোলনের আদেশ

প্রবাহ রিপোর্ট : হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নয়জনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পরের প্রক্রিয়ায় শিগগিরই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশগুলো উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করবে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে নয়জন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বানিয়াচং থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য দেন। এর প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তিনি হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লাশ উত্তোলনের আদেশ চেয়ে আবেদন করলে বিচারক মো. আবদুল আলীম তা মঞ্জুর করেছেন। লাশগুলো কবে উত্তোলন করা হবে জানতে চাইলে এসআই জাহাঙ্গীর বলেন, আদালতে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে লাশ উত্তোলনের আদেশ হয়েছে। জেলা প্রশাসন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিলে শিগগিরই এ আদেশ বাস্তবায়ন করা হবে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা হত্যা মামলায় আদালত এ আদেশ দিয়েছেন বলেও তিনি জানান। নিহতরা হলেন- বানিয়াচং উপজেলার ভাঙ্গার পাড়ের মো, ছানু মিয়ার ছেলে হোসাইন মিয়া, জাতুকর্ণপাড়ার মো. আব্দুন নূরের ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম, আব্দুর রউফ মিয়ার ছেলে মো. তোফাজ্জল হোসেন, পাড়াগাঁওয়ের ম. শমসের উল্লার ছেলে মো. মোজাক্কির মিয়া, পূর্বগড়ের মো. ধলাই মিয়ার ছেলে মো. সাদিকুর রহমান, কামালখানী মহল্লার মৃত মো. আলী হেসেনের ছেলে শেখ নয়ন হোসেন, সাগর দিঘীর পূর্বপাড়ের মৃত মোশাহিদ আখঞ্জীর ছেলে সোহেল আখঞ্জী, চানপুরের মৃত তাহের মিয়ার ছেলে আকিনুর রহমান ও খন্দকার মহল্লার মো. আবুল হোসেনের ছেলে মো. আনাস মিয়া। পুলিশ জানায়, গত ৫ আগস্ট বেলা ১১টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাগরদিঘীর পশ্চিমপাড় ঈদগাহ মাঠ থেকে মিছিল বের করে। গ্যানিংগঞ্জ বাজার প্রদক্ষিণ শেষে মিছিলকারী ৪-৫ হাজার লোক বড়বাজার শহীদ মিনারে গিয়ে জড়ো হন। পরে বিক্ষুব্ধ লোকজন মিছিল নিয়ে থানার সামনে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলে চারজনসহ সাতজন নিহত হন। তখন চিত্র ধারণ করতে গেলে বিক্ষুব্ধরা এক সাংবাদিককে পিটিয়ে হত্যা করে। মোট মৃতের সংখ্যা হয় আট। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা থানার এসআই সন্তোষ চৌধুরীকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরদিন গুলিবিদ্ধ আরেকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নিহত নয়জনের পরিবারের পক্ষ থেকে ও এসআই সন্তোষ হত্যাকা-ের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ও আহত একজনের বাবার পক্ষ থেকে মোট তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় আসামি প্রায় ১০ হাজার।