শ্রম খাতের উদ্বেগ দূর করতে বিশেষ দূত নিয়োগ: প্রধান উপদেষ্টা

প্রবাহ রিপোর্ট : শ্রম আইন সংস্কার এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম অধিকার গোষ্ঠী, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগ সমাধানের জন্য একজন বিশেষ দূত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল সোমবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি এম ফে রদ্রিগেজ এবং মার্কিন শ্রম বিভাগের পক্ষে ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি থিয়া লি সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধান উপদেষ্টা তাদের এ তথ্য জানান। এ সময় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা গত তিন মাসে শ্রম খাতে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, সরকার গত সাড়ে তিন মাসে শ্রম খাতের জন্য যা করেছে সবই বিস্ময়। মার্কিন কর্মকর্তারা মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে লক্ষাধিক গার্মেন্টস ও জুতা শ্রমিকদের বাঁচানোর জন্য কারখানায় ইউনিয়ন অধিকার এবং প্রতি বছর মজুরি পর্যালোচনার আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, মার্কিন প্রতিনিধিদলকে প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দেশে আরও বিদেশি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার প্রয়াসে ব্যাপক শ্রম সংস্কার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আমাদের শ্রম আইনকে বৈশ্বিক মানদ-ের সাথে সমান করতে চাই। এটা আমার অঙ্গীকার। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কেবলমাত্র দেশের শ্রম আইন সংস্কার করতে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম অধিকার গোষ্ঠী, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এবং পশ্চিমা দেশগুলির উদ্বেগগুলি সমাধানের জন্য একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করেছে। দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, বৈশ্বিক শ্রম অধিকার গোষ্ঠী এবং শীর্ষ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো যারা বাংলাদেশ থেকে পোশাক ও পাদুকা কেনে, তারা শ্রম আইন সংস্কার এবং বাংলাদেশের কারখানায় শ্রমিকবান্ধব পরিস্থিতি তৈরিতে অধ্যাপক ইউনূসের পদক্ষেপকে সমর্থন করে। সরকার গত সাড়ে তিন মাসে শ্রম খাতের জন্য যা করেছে, সেটা বিস্ময়কর মন্তব্য করে কেলি ফে রদ্রিগেজ উভয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত ১৮-দফা চুক্তি সহ পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকার শ্রম খাতে ইউনিয়ন অধিকার দেবেন। পোশাক কারখানায় ন্যূনতম মজুরির সুবিধার কথা বলতে গিয় থিয়া মে লি বলেন, এটি ব্যবসার জন্য ভালো এবং অর্থনীতির জন্য ভালো। কর্মী ইউনিয়ন হলো ‘গণতন্ত্রের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র’। তিনটি শীর্ষ মার্কিন ব্র্যান্ড পিভিএইচ, ক্যালভিন ক্লেইন এবং গ্যাপ ইনকরপোরেটেডের সিনিয়র কর্মকর্তারাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পিভিএইচ কর্পোরেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল ব্রাইড বলেছেন, তারা বাংলাদেশে শ্রম সংস্কারকে সমর্থন করেছেন এবং বলেছেন যে, তারা কম্বোডিয়ায় অনুরূপ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছেন। ড. ইউনূস ব্র্যান্ডগুলোর প্রতি জানুয়ারিতে তাদের অর্ডার মূল্যবৃদ্ধি ঘোষণা করার আহ্বান জানান, যাতে বাংলাদেশের নির্মাতারা সেই অনুযায়ী শ্রমিকের মজুরি বাড়াতে পারেন। বৈঠকে মার্কিন চার্জ ডি’ অ্যাফেয়ার্স মেগান বোল্ডেবও ছিলেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনূসের ব্যাপক শ্রম সংস্কারকে পূর্ণ সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা আপনার সঙ্গে অংশীদার হতে চাই।