জাতীয় সংবাদ

সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে বিধিনিষেধ কেন অবৈধ নয়: হাই কোর্ট

প্রবাহ রিপোর্ট : সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে সরকারের বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। এ বিষয়ে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায়ের বেঞ্চ গতকাল রোববার এ রুল জারি করে। আদালতে রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আমির হোসেন ও উজ্জ্বল হোসেন। পরে অ্যাডভোকেট আমির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণে সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ যুক্ত করে সরকারের ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করেন কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি এ এন এম হেলাল উদ্দিন। “ওই রিট আবেদনের ওপর তিন দিন শুনানি শেষে আজ আদালত রুল জারি করল। রুলে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে আদালত।” পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পূর্বে মিয়ানমার সীমান্তের কাছে সাগরের বুকে ৮ দশমিক ৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিন। কক্সবাজার জেলা শহর থেকে এর দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। বিস্তৃত জলরাশি আর মোহনীয় সৌন্দর্য্যের জন্য এই দ্বীপটিতে পর্যটকরা বেড়াতে ভালোবাসেন। সম্প্রতি এই দ্বীপের জীববৈচিত্র্য ও প্রাণ-প্রতিবেশের সুরক্ষায় সেখানে পর্যটক সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি বছর কেবল নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটিতে ভ্রমণ করা যাবে। ফেব্রুয়ারিতে ভ্রমণ নিষেধ থাকবে। এর মধ্যে নভেম্বরে দিনে গিয়ে দিনে চলে আসতে হবে, রাত কাটানো যাবে না। বাকি দুই মাস রাত্রি যাপনে বাধা নেই, তবে দিনে দুই হাজারের বেশি পর্যটক যাওয়া যাবে না। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের পর পর্যটন ব্যবসায় জড়িত ও ভ্রমণ পিপাসুরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে দ্বীপটির বাসিন্দারা যেমন কর্মহীন হবেন, তেমনি সেখানে পর্যটনকন্দ্রিক ব্যবসায়ও ধস নামতে পারে। অন্যদিকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, দেশের একমাত্র এই প্রবাল দ্বীপকে রক্ষা করতেই পর্যটনে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে সরকার। অ্যাডভোকেট আমির হোসেন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে অনিয়মিত পর্যটন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ আরোপ করে গত ২৮ অক্টোবর যে অফিস আদেশ জারি করেছিল পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ২১ নভেম্বর হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করা হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট আটজনকে বিবাদী করা হয়েছে এ রিট মামলায়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button