জাতীয় সংবাদ

মধ্যরাতে বুলডোজার চললো হাসানাত-আমুর বাসভবনে

প্রবাহ রিপোর্ট : বরিশাল নগরীতে তিন ঘণ্টাব্যাপী বুলডোজার দিয়ে ভাঙচুর চালানো হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বাসভবনে। আবুল হাসানাত বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বরিশাল-১ আসনের চারবারের এমপি ছিলেন। আমু বর্তমানে ঢাকায় কারাগারে রয়েছেন। ধানমন্ডিতে ভাংচুরের খবরে বরিশাল নগরীতেও নেমে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ১২টায় বুলডোজার নিয়ে নগরীর কালিবাড়ী রোডের সেরনিয়াবাত ভবনে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় সেনাবাহিনী তাদের বারবার নিবৃত্ত করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। কারণ ওই ভবনের আগুন থেকে পার্শ্ববর্তী ভবনেও আগুন লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এরপর সেনাবাহিনী এবং শিক্ষার্থীরা ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে শিক্ষার্থীরা বুলডোজার দিয়ে টিনশেড দোতলা ভবনের সামনের বারান্দার দেয়াল ভেঙে ফেলেন। ভাঙচুর চলাকালে ঘরে কেউ ছিল না। ভেতরে যে সকল আসবাবপত্র ছিল তা বাইরে এনে স্তূপাকারে ভাঙচুর করা হয়। মূলত ওই বাড়িটি হচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের। সেখানে বসে রাজনীতি পরিচালনা করতেন আবুল হাসানাত। এরপর বাড়িতে অবস্থান শুরু করেন আবুল হাসানাতের ছেলে সাবেক সিটি মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। সাদিক সেখান থেকে রাজনীতি পরিচালনা করায় তার বাবা আবুল হাসানাত চলে যান আগৈলঝাড়ার সেরালে। মাঝেমধ্যে আসতেন এ বাড়িতে। ওই ভবন ভাঙচুর শেষে বুলডোজার নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর বগুরা রোডে। সেখানে রয়েছে আমির হোসেন আমুর বিলাসবহুল দ্বিতল ভবন। প্রথমে বিশাল গেট বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর ভবনের ভেতরে চলে ভাঙচুর। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাসার ভেতরে থাকা আসবাবপত্র বাইরে এনে ভাঙচুর করেন। এ সময় বুলডোজার দিয়ে বারবার আঘাত হানা হয় আমুর ভবনে। বাদ যায়নি আমুর ভবনসংলগ্ন অপসোনিন কেমিক্যালের মালিকের ভবনও। সেখানেও ভাঙচুর চালায় শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এ ভাঙচুর চালানো হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা বুলডোজার নিয়ে চলে যান। সেখানে উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগরের সভাপতি শহিদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনও ফ্যাসিস্টের স্থান হবে না। জুলাই-আগস্টের আন্দোলন কারো মদতে হয়নি। শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান থেকেই ওই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ত দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করেছে। সে এখন ভারতে অবস্থান করে সেখানে বসে উসকানি দিচ্ছে। তারা যাতে বাংলাদেশে আর আসতে না পারে এ জন্য তাদের আবাসস্থান গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ থেকে পরবর্তীতে যারা সরকার পরিচালনা করবে তাদের জন্যও বিষয়টি শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট বিকালে আবুল হাসানাতের বাসভবনে এবং আমির হোসেন আমুর বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করেন ছাত্র-জনতা। ওই সময় সেরনিয়াবাত ভবন থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার হয়েছিল। ওই অগ্নিকা-ের পর থেকে সেরনিয়াবাত ভবনে কেউ বসবাস করছেন না। তবে আমির হোসেন আমুর বাসভবন সংস্কার করা হলেও সেখানেও কেউ থাকেন না।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button