জাতীয় সংবাদ

দেশে পেপ্যাল চালুর জন্য মীর স্নিগ্ধের খোলা চিঠি

প্রবাহ রিপোর্ট : দেশে পেপ্যাল চালুর অনুরোধ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ মীর মুগ্ধর ভাই ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাবেক সিইও (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) মীর স্নিগ্ধ। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি এ চিঠিটি লেখেন। চিঠিটি তিনি তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও প্রধান উপদেষ্টার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবকে ট্যাগ করেন। চিঠিতে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ লিখেছেন, আমি ২০১৯ সাল থেকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করছি এবং ২০২২ সালে একজন টপ রেটেড ফ্রিল্যান্সার হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছি।আমার ক্যারিয়ার এবং শহীদ মুগ্ধদের মতো ফ্রিল্যান্সারদের অর্জন সম্পর্কে অনেকেই অবগত। শুরুর দিকে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সময় কাটানোর উদ্দেশে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আমার মূল পেশায় রূপ নেয়। ঘরে বসে বৈশ্বিক বাজারে কাজ করার সুযোগ থাকায় ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে তরুণদের জন্য এক বড় সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে হাজার হাজার দক্ষ ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। যারা প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত করছেন। তিনি লেখেন, আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে পেপ্যালের অনুপস্থিতির ফলে এই ফ্রিল্যান্সারদের একটি মৌলিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।এই একটি সমস্যার কারণে আমরা বহু আন্তর্জাতিক কাজ হাতছাড়া করি। মার্কেটপ্লেসের বাইরে অনেক ক্লায়েন্ট এবং কোম্পানি কাজ দিতে চাইলেও পেপ্যালের অনুপস্থিতির কারণে আমরা সেই সুযোগগুলো গ্রহণ করতে পারি না। মার্কেটপ্লেসে কাজ করলেও উচ্চ কমিশন দিতে হয়, যা ফ্রিল্যান্সারদের এবং দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার জন্য ক্ষতিকর। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাবেক সিইও লেখেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে যেখানে পেপ্যাল স্বাভাবিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের মতো সম্ভাবনাময় ডিজিটাল অর্থনীতির দেশে আজও এটি চালু না হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি লেখেন, একবার চিন্তা করুন, একজন ক্লায়েন্ট যদি মাসে $১২০০ ডলারে আমাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে চান, শুধুমাত্র পেপ্যালের অভাবে সেই কাজটি আমি গ্রহণ করতে পারছি না। এতে শুধু আমার ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, দেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। চিঠিটিতে মীর স্নিদ্ধ তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং প্রধান উপদেষ্টার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে লেখেন, আমি বিশ্বাস করি, আপনারা এই সমস্যা সম্পর্কে অবগত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দেশের ডিজিটাল অগ্রগতিতে আমি নিজের সাধ্যমতো অবদান রাখছি। চিঠিতে তিনি আরও লেখেন, আজ দীর্ঘদিন কাজ করার পর প্রথমবারের মতো একটি অনুরোধ করছি, বাংলাদেশে পেপ্যালের সেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হোক। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য যদি কোথাও আমার মতো ফ্রিল্যান্সারদের সহায়তা প্রয়োজন হয়- আমি সদা প্রস্তুত। প্রয়োজন হলে যেকোনোভাবে যুক্ত হয়ে এই বিষয়ে কাজ করতে আমি আগ্রহী। মীর স্নিগ্ধ লেখেন, আমাদের মতো যারা চুপচাপ এই পেশায় দেশের হয়ে কাজ করছে, তাদের জন্য এটি হবে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এই চাওয়াটি পূরণ হলে তা শুধু আমার নয়, মুগ্ধর মতো হাজারো তরুণ ফ্রিল্যান্সারের ভবিষ্যতের জন্য পথ তৈরি করবে এবং দেশের অর্থনীতিতে এক নতুন সম্ভাবনার দিক উন্মুক্ত হবে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button