জাতীয় সংবাদ

কাগজপত্র দেখে টিউলিপকে বাংলাদেশি মনে হচ্ছে : দুদক চেয়ারম্যান

প্রবাহ রিপোর্ট : যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) ও সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে ব্রিটিশ পরিচয় দিলেও কাগজপত্র দেখে তাকে ‘বাংলাদেশি মনে হচ্ছে’ বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা চলমান এবং আরেকটি তদন্তাধীন। যতই বলুক না কেন তিনি ব্রিটিশ, আমরা যখন আমাদের কাগজপত্র দেখছি তাকে বাংলাদেশি মনে হচ্ছে। এখন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নিজের সুবিধার জন্য কখনো ব্রিটিশ, কখনো বাংলাদেশি বলেন; এটি বলা সমীচীন কি না তা আপনারা (সাংবাদিকদের উদ্দেশে) বিবেচনা করবেন। গতকাল সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। টিউলিপ সিদ্দিক যদি নির্দোষই হয়ে থাকেন তবে তিনি সিটি মিনিস্টার পদ বা মন্ত্রিত্ব কেন ছাড়লেন-এ প্রশ্নও তুলেছেন দুদক চেয়ারম্যান। বলেন, টিউলিপ নিজেকে নির্দোষ দাবি করলে, তার আইনজীবী দুদকে চিঠি লিখলেন কেন? তিনি মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন কেন? এসময় তিনি টিউলিপকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, টিউলিপের ব্যাপারে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। সঠিক ঠিকানায় তলবগুলো পাঠানো হচ্ছে। রাজউকের প্লট, গুলশানের প্লট বিতরণের অনিয়মসহ আরও অভিযোগ আছে। তার আয়কর রিটার্ন ঘেটে দেখলাম, সেখানে তার স্বর্ণ ১০ ভরি থেকে হঠাৎ লাফ দিয়ে ৩০ ভরি হয়ে গেছে। দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি। ‘বাংলাদেশের আইনের বিধান অনুযায়ী টিউলিপকে আদালতে মোকাবিলা করতে হবে। আমরা তার আইনজীবীকে এটা জানিয়েছি’- যোগ করেন দুদক চেয়ারম্যান। বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে দুদক। এর মধ্যে লন্ডনে শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের ফ্ল্যাট টিউলিপ ব্যবহার করেছেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমের খবরে বেরিয়ে আসে। এসব নিয়ে সমালোচনার মুখে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্য সরকারের সিটি মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার) পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি গত বছর দেশটির সাধারণ নির্বাচনে লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে টানা চতুর্থবারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর জুলাইয়ে তাকে লেবার পার্টি সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার করা হয়েছিল। এরই মধ্যে রাজধানীর গুলশানের একটি প্লট অবৈধভাবে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করিয়ে দিয়ে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে ‘ঘুষ’ হিসেবে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে টিউলিপের বিরুদ্ধে গত ১৫ এপ্রিল মামলা করে দুদক। টিউলিপকে গত ১৫ জুন দ্বিতীয় দফা তলব করে দুদক। এর আগে গত ১৪ মে তাকে তলব করেছিল দুদক। তবে সেই তলবের কোনো চিঠি পাচ্ছেন না বলে বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করছেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button