জাতীয় সংবাদ

২০১৮ সালের ‘ভুয়া নির্বাচন’ নিয়ে নুরুল হুদাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ

# গ্রেপ্তার সাবেক সিইসি ডিবি হেফাজতে #

প্রবাহ রিপোর্ট ঃ রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা বিএনপির মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে। পরে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। রাতেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও নিরাপত্তার স্বার্থে উত্তরা পশ্চিম থানা থেকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। দায়ের করা মামলায় উল্লিখিত অভিযোগ, ২০১৮ সালের অনুষ্ঠিত ভুয়া জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। জানতে চাইলে ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমাউল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে বিএনপির পক্ষ থেকে ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন নুরুল হুদা।

বিএনপির পক্ষ থেকে দায়ের মামলার মোট আসামি ২৪ জন। এর মধ্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের সাবেক ৪ আইজিও আসামি। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে ডিবি কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ডিবি হেফাজতে মামলার অভিযোগের ব্যাপারে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আগামীকাল সোমবার (২৩ জুন) সকালে রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হবে। জানতে চাইলে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচন কমিশনারদের সংবিধান লঙ্ঘনের দায় এবং অপরাধ করার দায়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি পত্রের মাধ্যমে ২০১৮ সালে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করা হয়েছিল। সে অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সেটার ছায়া লিপি ও আলামতসহ আজ অভিযোগ জমা দিয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলার অভিযোগ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের এ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বলেন, ২০১৮ সালে ভুয়া নির্বাচন নিয়ে অবশ্যই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ওই ভুয়া নির্বাচন কীভাবে ও কাদের কাদের সহযোগিতা পরিকল্পনায় আয়োজন করা হয়েছিল তা জানতে চাওয়া হবে। এসংক্রান্তে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে মামলা করে বিএনপি। মামলার মোট আসামি ২৪ জন। এর মধ্যে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক ৪ আইজি।
রোববার (২২ জুন) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহউদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলা নম্বর-১১। মামলার আসামিরা হলেনÍ সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার মো. আব্দুল মোবারক, আবু হানিফ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, শাহ নেওয়াজ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, তৎকালীন পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, তৎকালীন ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার, সাবেক ডিজি র‌্যাব ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক, সাবেক এসবি প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিজিএফআই প্রধান (নাম অজ্ঞাত), সাবেক এনএসআই প্রধান ও সাবেক ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল আলম, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব, আলমগীর হোসেন, আনিছুর রহমান ও তৎকালীন নির্বাচন সচিব (নাম অজ্ঞাত)।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button