ইরানি খাইবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তেল আবিব-হাইফাসহ বিভিন্ন শহরে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি

# যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলে যৌথ হামলার জবাবে এই হামলা করল ইরান #
প্রবাহ রিপোর্ট ঃ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ হামলার জবাবে এবার ইরান সরাসরি ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে খাইবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার ফলে তেল আবিব ও হাইফার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে। এই হামলার পর পুরো ইসরায়েলজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং জেরুজালেমেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
ইরানের অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩-এর ধারবাহিকতায় ইসরাইলের বিভিন্ন অঞ্চলে ২০তম হামলা হয়েছে । ইসরাইলের ওপর সাম্প্রতিক হামলায় ইরান খাইবার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে দাবি করেছে।
কিছুক্ষণ আগে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের জারি করা একটি বিবৃতিতে ইসরাইলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতে প্রথমবারের মতো ‘খাইবার’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কথা জানানো হয়েছে। রোববার (২২ জুন) রাতে এই হামলা চালানো হয় বলে জানায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দেওয়া তথ্যমতে, ইরান থেকে দুটি দফায় মোট ২৭টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয় প্রথম দফায় ২২টি এবং দ্বিতীয় দফায় ৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এই হামলার পেছনে রয়েছে ইরানের সাম্প্রতিক সামরিক প্রতিক্রিয়া এবং তাদের ভূখ-ে চালানো মার্কিন ও ইসরায়েলি হামলার জবাব হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নেয় সিরিয়ার দখলীকৃত গোলান হাইটস অঞ্চল থেকে শুরু করে উত্তর ইসরায়েলের আপার গ্যালিলি, এমনকি উপকূলীয় তেল আবিব ও হাইফা অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা। এতে অন্তত ১০টি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি বা বড় শার্পনেল বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষতি হয়। তেল আবিব ও হাইফায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা তুলনামূলক বেশি হলেও, এখনো নিশ্চিত করে জানা যায়নি যে কোন কোন ভবন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েলের জরুরি মেডিকেল সার্ভিস জানিয়েছে, এই হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৬ জন আহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চিকিৎসা দলগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম চালাচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আহতদের অনেকেই শার্পনেল আঘাতে আহত হয়েছেন এবং অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকতে পারেনÍতাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।
ইরানের এই হামলার পরপরই জেরুজালেমে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য সংবাদদাতা হুগো বাছেগা জেরুজালেম থেকে নিশ্চিত করেছেন, রাতের আকাশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি শুরু করেন। হামলার সময় জেরুজালেমেও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হতে দেখা যায়।
এই হামলা ইঙ্গিত দেয় যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষের সম্ভাবনা এখন আরও জোরালো। অতীতে এই ধরনের হামলা প্রক্সি বাহিনীর মাধ্যমে পরিচালিত হলেও এবার দুই দেশের মধ্যে সরাসরি হামলা পাল্টা হামলার চিত্রই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা