ইরানের তিনটি পারমানবিক স্থাপনায় বাংকার বাস্টার বোমা নিক্ষেপ

# অপারেশন মিডনাইট হ্যামার: যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ মিনিটের সামরিক অভিযান #
# বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পকে ধিক্কার #
# ইরান বলছে তারা পারমানবিক উপাদান আগেই সরিয়ে ফেলেছে। আর স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তবে ধ্বংস হয়নি #
# হরমুজ প্রণালী বন্ধের সরকারি অনুমোদন ইরানের সংসদে, এটা বন্ধ হলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সব দেশের জ্বালানী তেল আনা বন্ধ হয়ে যাবে #
# যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে ইসরাইলে ৪র্থ প্রজন্মের খাইবার ক্ষেপনাস্ত্র দিয়ে ব্যপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছ ইরান #
প্রবাপ রিপোর্ট ঃ
অনেক জল্পনা-কল্পনার পর হুট করেই ইরানে চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার রাতে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় একযোগে হামলা চালিয়েছে তারা। এই সামরিক অভিযানের আনুষ্ঠানিক নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’। প্রায় ২৫ মিনিট দীর্ঘ এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের ১২৫টি যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি থেকে উড্ডয়নের প্রায় ৩৭ ঘণ্টা উড়ে অপারেশন মিডনাইট হ্যামারে অংশ সাতটি বি-২ বোমারু বিমান। এই বিমানগুলো ইরানের ফরদো এবং নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায় ১৪টি বাংকার বাস্টার বোমা ছোড়ে। একইসময়ে ইস্পাহানে অবস্থিত আরেকটি পরমাণু স্থাপনায় সাবমেরিন থেকে প্রায় দুই ডজন টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
ইরানের পরমাণু কার্যক্রম রুখে শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চেয়ে এসেছে ইসরাইল। কারণ মাটির অনেক নিচে অবস্থিত ফরদো পরমাণু স্থাপনায় হামলা করার মতো অস্ত্র ইসরাইলের কাছে ছিল না। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
সামরিক বিশ্লেষকরা জানান, শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বিমান দিয়ে বাংকার বাস্টার ছুড়লেই ফরদো পরমাণু স্থাপনার ক্ষতিসাধন করা সম্ভব। শেষ পর্যন্ত সেটাই করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এটাই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বি-২ বোমারু বিমান ব্যবহার করে পরিচালিত সবচেয়ে বড় অভিযান। অভিযানের পর একে অভাবনীয় এক সাফল্য হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথও দাবি করেছেন, এই অভিযানের মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করা হয়েছে। যদিও ইরান এখনো ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। দেশটির রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, গত রাতের হামলায় ইরানে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কিছু অসমর্থিত সূত্রের খবর, হামলার শঙ্কায় ইরান নাকি বহুল আলোচিত ফরদো ঘাঁটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ সবকিছু আগেই সরিয়ে নিয়েছে। অপরদিকে হরমুজ প্রণালি বন্ধের অনুমোদন ইরানি সংসদের ঃ ইরান-ইসরাইল সংঘাতের মধ্যে হরমুজ প্রণালি বন্ধ করা বিষয়ক সিদ্ধান্তের অনুমোদন দিয়েছে ইরানি সংসদ। রোববার দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যম প্রেস টিভির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দেশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থাকে এখন এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে হবে। বৈশ্বিক তেল রপ্তানির বড় একটি অংশ পরিবহণে ব্যবহৃত হয় হরমুজ প্রণালি। এ প্রণালির উত্তরে ইরান, দক্ষিণে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান অবস্থিত। এটি বন্ধ হলে তেল পরিবহণের জন্য আর বিশেষ কোনো বিকল্প পথ খোলা থাকবে না। মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের মতে, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশ হরমুজ প্রণালির মধ্য দিয়ে রপ্তানি হয়েছিল।