১৭ লাখ টাকায় বৈধ হলো ৮ হাজার কেজি অবৈধ মাছ

প্রবাহ রিপোর্ট : বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে অবৈধভাবে মাছ শিকার করেন ভারতীয় জেলেরা। ইলিশসহ অন্তত ১০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ শিকার করেন তারা। কিন্তু এসব মাছ আর তাদের নিজ দেশ ভারতে নিতে পারেননি। তার আগেই তারা ধরা পড়েন বাংলাদেশের নৌবাহিনীর হাতে। দুটি ফিশিং ট্রলারসহ ৩৪ জন ভারতীয় জেলে গত সোমবার দিবাগত রাতে আটক হন। তবে আটক জেলেদের গতকাল মঙ্গলবার বাগেরহাট জেলহাজতে পাঠানো হলেও জব্দ হওয়া আট হাজার কেজি অবৈধ মাছ নিলামে তুলে বিক্রি করে স্থানীয় মৎস্য অফিস। গত সোমবার রাত ১১টা থেকে নিলামের হাঁকডাক শুরু হয়ে গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে রফা হয় নির্ধারিত দামে। ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিলামে সর্বোচ্চ মূল্য দিয়ে মাছগুলো নেয় সাগর ফিশ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এর সঙ্গে ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) যোগ হয়ে মোট দাম হয় ১৭ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা। আর এভাবেই ভারতীয় জেলেদের জালে ধরা অবৈধ মাছ হয়ে যায় বৈধ। মোংলা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন-২০২০ অনুযায়ী শিকার হওয়া অবৈধ মাছ নিলামে তুলে বিক্রির বিধান রয়েছে। এ কারণে অবৈধভাবে ভারতীয় জেলেদের জালে ধরা ইলিশ, বেলে, রূপচাঁদা, ছুরি, চিংড়িসহ ১০ প্রজাতির আট হাজার কেজি সামুদ্রিক মাছ নিলামে তুলে বিক্রি করা হয়। বিক্রি হওয়া মাছের ১৭ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা গতকাল মঙ্গলবার সকালে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে। এর আগে, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে মাছ শিকার করা ৩৪ ভারতীয় জেলেকে আটক করে নৌবাহিনী। এ সময় ‘এফবি ঝড়’ ও ‘এফবি মঙ্গল চ-ি-৩৮’ নামে ভারতীয় দুটি মাছ ধরার ট্রলারও জব্দ করা হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিয়মিত টহল চলাকালে জাহাজের রাডারে সন্দেহজনক মাছ ধরার ট্রলারের উপস্থিতি লক্ষ করে। এ সময় তারা ওই ট্রলারের দিকে এগোতে থাকলে মাছ ধরার ট্রলারগুলো পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন নৌবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে দুটি ভারতীয় ট্রলারকে বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে আটক করেন। আটক জেলেদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মোংলা থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, ‘আটক ৩৪ ভারতীয় জেলের বিরুদ্ধে সমুদ্র আইন (২০২০) ২৫ (এ) বা মেরিন ফিশারিজ ল ধরায় মামলা হয়েছে। মোংলা নৌঘাঁটির পেটি অফিসার রেজাউল করিম বাদী হয়ে এই মামলা করেন। আসামিদের বাড়ি ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায়। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।