জাতীয় সংবাদ

আগামীতে আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে : জামায়াত আমির

প্রবাহ রিপোর্ট : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াত আগামীতে সরকার গঠন করলে দলের কোনো এমপি-মন্ত্রী সরকারি উপহার নেবেন না। তারা ট্যাক্সবিহীন গাড়িতে চড়বেন না। নিজ হাতে টাকা চালাচালি করবেন না। তিনি বলেন, আগামীর বাংলাদেশে আরেকটা লড়াই হবে। একটি লড়াই হয়েছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, আরেকটি হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এই দুর্নীতির মূলোৎপাটনের জন্য আমরা যা দরকার করব। এতেও আমরা বিজয়ী হবো। গতকাল শনিবার জামায়াত আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতের আমির বলেন, আমি গভীর পরিতাপের সঙ্গে জানাচ্ছি, আজকের এই সমাবেশ আয়োজন করতে গিয়ে তিনজন ভাই নিহত হয়েছেন। তারা এই সমাবেশে এসে একজন অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন। আল্লাহ তাদের কবুল করুন। আবু সাঈদরা যদি বুক পেতে না দিতো তাহলে আজও অনেকে তাদের জীবন হারাতো। তিনি আরও বলেন, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা পাওয়া, তাদের যেন তুচ্ছতাচ্ছিল্য না করা হয়। শিশু রাজনীতিবিদ বলে যেন অবজ্ঞা না করা হয়। অন্য কোনো দলকে অবজ্ঞা যেন না করা হয়। অরাজনৈতিক ভাষায় যেন কথা না বলা হয়। যারা পারবে না, বুঝবেন তাদের মনে ফ্যাসিবাদ ভর করেছে। জাতীয় ঐক্যের বীজতলা আমরা তৈরি করব। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী যে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়বে তার প্রমাণ কী? তা বিশ্বাস কীভাবে করবেন? এই বক্তব্য প্রদানকালে মঞ্চে পড়ে যান জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। এর কিছুক্ষণ পরই তিনি উঠে কথা বলেন। গরমের কারণে অসুস্থ হন বলে জানান তিনি। এরপর দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি কথা বলতে শুরু করলে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। জামায়াতের স্বেচ্ছাসেবক ও চিকিৎসকরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি বাধা দেন। অসুস্থ অবস্থায় মঞ্চে বসেই মাইক হাতে নিজের সমাপনী বক্তব্য দেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। স্টেজের মেঝেতে বসেই জামায়াত আমির বলেন, আল্লাহ যতদিন হায়াত দিয়েছেন জনগণের জন্য লড়াই অব্যাহত থাকবে। আল্লাহ আমাদের যদি সুযোগ দেন তাহলে মালিক হবো না, সেবক হবো। আমরা নির্দেশনা দিচ্ছি, জামায়াত থেকে আগামীতে যারা সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হবেন, তারা কোনো সরকারি উপহার গ্রহণ করবেন না। তারা ট্যাক্সবিহীন গাড়িতে চড়বেন না। নিজ হাতে টাকা চালাচালি করবেন না। জাতীয় সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তারা নির্দিষ্ট কোনো কাজের জন্য বরাদ্দ পেলে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের কাছে তার বিবরণ তুল ধরতে বাধ্য হবেন। চাঁদা আমরা নেবো না, দুর্নীতি আমরা করবো না। চাঁদা নিতে দেবো না, দুর্নীতি আমরা সহ্য করবো না। আজকে আমি জামায়াত আমির হয়ে কথা বলতে আসিনি, এসেছি ১৬ কোটি মানুষের একজন হয়ে কথা বলতে। এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি শিশুদের বন্ধু, আমি যুবকদের ভাই, আমি বয়স্কদের সহযোদ্ধা, আমি বোনদের ভাই। সুতরাং, তাদের মুক্তির জন্য আজকে দায়িত্ব নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। রাস্তার একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, গায়ের ঘাম ঝরানো ভাইরা তাদের জন্য কথা বলতে এসেছি। কোনো অভিজাত শ্রেণির হয়ে কথা বলতে আসিনি। জুলাই আন্দোলনে শহীদ হতে না পারাটা তার দুর্ভাগ্য উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, আপনাদের দোয়া চাই, ইনসাফের পক্ষে যে লড়াই হবে, আগামীতে যে আন্দোলন হবে আল্লাহ যেন সেখানে আমাকে শহীদ হিসেবে কবুল করেন। তিনি বলেন, এখন থেকে বাংলাদেশে পুরোনো কোন কিছুই থাকবে না। পুরোনো এই বস্তাপচা জিনিস যদি এই দেশে থাকে তাহলে কেন এত লোক জীবন দিলো? নতুন পদ্ধতিতে বাংলাদেশ চলবে। এছাড়া এদেশ চলবে না।
হাসপাতালে: সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে অসুস্থ হয়ে মঞ্চে পড়ে যান জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। পরে সমাবেশ শেষে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রচার বিভাগ থেকে জানানো হয়, দলের আমিরের প্রেশার, সুগার লেভেল ঠিক আছে। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ডা. শফিকুর রহমানের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছে দলটি। গতকাল শনিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে অসুস্থ হয়ে মঞ্চে পড়ে যান জামায়াত আমির। এর কিছুক্ষণ পরই তিনি উঠে কথা বলেন। গরমের কারণে অসুস্থ হন বলেও জানান জামায়াত আমির। এরপর দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি কথা বলতে শুরু করে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। জামায়াতের স্বেচ্ছাসেবক ও চিকিৎসকরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। অসুস্থ অবস্থায় মঞ্চে বসেই মাইক হাতে নিজের সমাপনী বক্তব্য দেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button